ছাত্র সংসদ গঠনকে কেন্দ্র করে ছাত্র পরিষদের দুটি গোষ্ঠীর গোলমালে মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তেজনা দেখা দেয় জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র (এসি) কলেজে। এদিন সংসদ গঠনের দিন ছাত্র পরিষদের অন্দরেই ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে যুব কংগ্রেস নেতৃত্বের সংঘাত দেখা দেয়। সকাল থেকেই ছাত্র পরিদের একাংশ সমর্থক কলেজের গেট দখল করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। দিনভর দুপক্ষের টানাপোড়েনের পরে, বিকেলে যুব কংগ্রেসের ঘনিষ্ট গোষ্ঠীর ছাত্র প্রতিনিধিরা পুলিশের ভ্যানে করে কলেজে আসেন। ছাত্র সংসদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাজীব রায় নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে। দলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সংসদের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সহ ৮ জন নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি ছাত্র পরিষদ থেকে ইস্তফা দেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ৪৫টি আসনের মধ্যে ৩৭টিতে জয়ী হয়ে সংসদের নিরঙ্কুশ দখল নিয়েছে ছাত্র পরিষদ। |
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, “যুব কংগ্রেসের এক জেলা নেতার মদতেই ভয় দেখিয়ে সকাল থেকে ছাত্র প্রতিনিধিদের আটকে রাখা হয়। তাঁদের দিয়ে জোর করে নিজেদের পছন্দসই সংসদ গঠন করে নেওয়া হয়েছে।” জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি নিরঞ্জন সরকার বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবেই সংসদ গঠন হয়েছে। একাংশ ছাত্র প্রতিনিধি নিরাপত্তা চাওয়ায় তাঁদের পুলিশের গাড়িতে কলেজে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, এসি কলেজের ছাত্র সংসদ গঠন নিয়ে গত সোমবার রাতে ছাত্র পরিষদের বৈঠক হয়। সেখানে জেলা কংগ্রেসের একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সকলে সহমত হতে পারেননি। এদিন সকালে জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট ছাত্র পরিষদের এক নেতা কলেজের ২২ জন নির্বাচিত প্রতিনিধিকে নিয়ে নতুন প্যানেল তৈরি করেন। এতেই ছাত্র পরিষদের একাংশ সকাল থেকে কলেজের সামনেই বিক্ষোভ শুরু করে দেন। তাঁদেরকে শান্ত করে কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্বের প্রতিনিধিরা এলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। যুব কংগ্রেসের সভাপতি সৈকতবাবু বলেন, “গণতান্ত্রিকভাবেই ছাত্র সংসদ গঠন করা হয়েছে। যাঁরা দল ছাড়ার কথা বলেছেন, তাঁরা দলেরই ছেলে দলেই থাকবেন।” অপর গোষ্ঠীর নেতা তথা ছাত্র পরিষদের কলেজের সংসদের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক দ্বীপায়ন ঘোষ বলেন, “ছাত্র পরিষদে দলতন্ত্র চলছে। গায়ের জোরে প্রতিনিধিদের তুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে নিজেদের পছন্দের সংসদ তৈরি করা হচ্ছে। তাই আমরা দল ছেড়ে দিয়েছি। তবে অন্য কোনও দলে যাচ্ছিনা।” জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহন বসু বলেন, “যাঁরা ছাত্র সংগঠন দেখেন তারাই এই নিয়ে মন্তব্য করতে পারবেন। আমি কিছু বলতে পারব না।” |