সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র
রাজ্যের আশঙ্কা কাটাতে টেলিফোন স্বরাষ্ট্রসচিবের
জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রশমিত করতে খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে আসরে নামতে হল। এ বিষয়ে রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তা দূর করতে আজ রাজ্যের মুখ্য সচিব সমর ঘোষের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজ কুমার সিংহ।
গতকালই জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র (এনসিটিসি) নিয়ে আপত্তি তুলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, এই সন্ত্রাস দমন কেন্দ্রকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তাতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপের সুযোগ রয়েছে। রাজ্যের এই আপত্তির কথা গতকালই চিঠি দিয়ে কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কথা জানতে পেরেই তৎপর হয়ে ওঠে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নর্থ ব্লকের শীর্ষ সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিবের আলোচনা হয়। তার পরেই স্বরাষ্ট্র সচিব মহাকরণে ফোন করে সমরবাবুর সঙ্গে কথা বলেন। তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা হয়, শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদ দমনে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর জন্য এই কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকারের মূল আশঙ্কা, কেন্দ্র চাইলে তার ইচ্ছামতো কোনও ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে এই সংস্থার মাধ্যমে দমনমূলক পদক্ষেপ করতে পারে। মুখ্য সচিবকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব বোঝান, শুধুমাত্র কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বা তার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে এনসিটিসি। অন্য কোনও বিষয়ে নাক গলানো হবে না। মুখ্য সচিব যাতে এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন, সে অনুরোধও জানান রাজ কুমার।
লোকপাল বিল, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ, তিস্তা প্রকল্পের পরে এ বার জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখছে কেন্দ্র। কারণ প্রধান শরিকের আপত্তিতে এর আগে সব ক্ষেত্রেই হোঁচট খেতে হয়েছে ইউপিএ-সরকারকে। মমতার সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কও। এনসিটিসি-র বিষয়ে আপত্তি তুলে তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। মমতার মতো তাঁরও আপত্তির কারণ হল, ইউএপিএ-র মতো কড়া আইনে কোনও সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা বা তল্লাশি চালানোর অধিকার দেওয়া হয়েছে এনসিটিসি-কে। সেখানে রাজ্যের অনুমতির প্রয়োজন নেই। নবীন ও মমতা, দু’জনেরই যুক্তি, আইন-শৃঙ্খলা যেখানে রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়, সেখানে রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই হস্তক্ষেপ করতে চাইছে কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এটা মেনে নেওয়া যায় না।
আঞ্চলিক উন্নয়নের প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীন পট্টনায়ককে নিয়ে নীতীশ কুমার যখন জোট তৈরি করতে চাইছেন, তখন জাতীয় সন্ত্রাস দমন কেন্দ্র নিয়ে মমতা ও নবীনের একই সুর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে লোকপাল বিলের ক্ষেত্রেও নবীনের বিজেডি দলের সাংসদ বি মেহতাবের লোকসভার বক্তৃতা শুনেই তৎপর হয়ে উঠেছিলেন মমতা। মনমোহন-সরকার তথা কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বোঝাতে চাইছে, এনসিটিসি এখনও চূড়ান্ত রূপ নেয়নি। এনসিটিসি-র পরিচালনায় যে ‘স্থায়ী পরিষদ’ থাকবে, তাতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যের সন্ত্রাসদমন বাহিনীর প্রধানরাও থাকবেন। কাজেই রাজ্যকে জানিয়েই সব রকম পদক্ষেপ করা হবে। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে এসে প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলে তাঁকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.