বকেয়ার অর্ধেক দিতে হবে এক মাসে
১৫ দিনের মধ্যেই পরিবহণে পেনশন চালুর নির্দেশ কোর্টের
রিবহণ নিগমগুলির অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন কোনও মতেই বন্ধ করে রাখা চলবে না বলে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। পেনশন চালু করতে হবে ১৫ দিনে।
আর বাকি পাওনাগণ্ডার অর্ধেক মিটিয়ে দিতে হবে ৪ সপ্তাহের মধ্যে।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
ক্ষমতায় আসার পরপরই রাজ্যের নয়া সরকার পরিবহণ নিগমগুলির কর্মীদের পেনশন বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, ১৫ দিনে পেনশন চালু না হলে এক সদস্যের বেঞ্চ এর আগে যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেটাই কার্যকর করতে ফের নির্দেশ দেওয়া হবে। ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এর আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কর্মীরা পেনশন না পেলে সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের বেতন বন্ধ করে ওই টাকায় আবেদনকারীদের পাওনা মেটাতে হবে। রাজ্য সরকার অধিগৃহীত এই সব পরিবহণ সংস্থায় যাঁরা ‘কনট্রিবিউটর’ হিসাবে কাজ করতেন এবং অবসর নিয়েছেন, তাঁদের প্রাপ্যের ৬০ শতাংশও চার সপ্তাহের মধ্যে মেটাতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
হাইকোর্টের নির্দেশ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “রায়ের প্রতিলিপি হাতে আসেনি। তাই এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না।” তবে মন্ত্রী জানান, এ দিনই সিএসটিসি-র অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেনশনের টাকা মঞ্জুর করে ফাইল ছাড়া হয়েছে।
কিছু দিন আগে সিএসটিসি, সিটিসি-র অবসরপ্রাপ্ত কয়েক জন কর্মী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশে তাঁদের পেনশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা পেনশন পান এক থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে। ওই টাকাই অবসর জীবনের একমাত্র সম্বল। তা-ও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরা প্রায় অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, বিভিন্ন পরিবহণ নিগমের এমডি, বোর্ডের সদস্য, চেয়ারম্যান-সহ উঁচুতলার কর্তাদের বেতন, ভাতা বা সাম্মানিক বন্ধ করে সেই টাকায় আবেদনকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রাপ্য মেটাতে হবে।
এক সদস্যের বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন নিগমের উঁচুতলার কর্মীরা ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন। আবেদনে তাঁরা বলেন, নিগমের যা আয়, তাতে সব খরচ চালানো সম্ভব নয়। রাজ্য সরকার ভর্তুকি দেয়, তাই চলে। কিছু উঁচুতলার কর্মীর বেতন বন্ধ করে সমস্যা মিটবে না। এই আপিল মামলার শুনানির সময় ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চায়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিগমগুলির আয়ে সংস্থা চলে না। রাজ্য সরকারকে বিরাট অঙ্ক ভর্তুকি দিতে হয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন নিগমের কর্তা ও পরিবহণ কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকের পর রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানানো যাবে।
এ দিন শুনানিতে সরকার পক্ষ জানায়, বিভিন্ন নিগমের কর্মীরা যাতে বেতন পান, সরকার তার ব্যবস্থা করছে। সংস্থাগুলিকে লাভজনক করার যায় তা লক্ষ্যেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সংস্থাগুলি যত দিন না লাভজনক হচ্ছে, তত দিন বেতন ও অন্যান্য খাতে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা হবে বলেও সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কী ভাবে লাভজনক হবে সেটা সংস্থাগুলি ও রাজ্য সরকারের বিষয়। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন বন্ধ করা যাবে না। বন্ধ করা যাবে না অবসরকালীন অন্যান্য প্রাপ্য। ১৫ দিনের মধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন পৌঁছে দিতে হবে।


বাকির খাতায়
সিএসটিসি এসবিএসটিসি
• পেনশন ২.৫ কোটির বেশি
• গ্র্যাচুইটি ১৬ কোটি
• লিভ স্যালারি প্রায় ৫ কোটি
• পেনশন বকেয়া নেই
• গ্র্যাচুইটি
• লিভ স্যালারি প্রায় ১ কোটি
 
এনবিএসটিসি সিটিসি
• পেনশন ৫ কোটি
• গ্র্যাচুইটি ২০ কোটি
• লিভ স্যালারি প্রায় ১৬ কোটি
• পেনশন
• গ্র্যাচুইটি ১০ কোটি
• লিভ স্যালারি

(রয়েছে আরও কিছু প্রাপ্য) * সব অঙ্ক টাকায়
সূত্র: পরিবহণ নিগম

এ দিনই কলকাতা ট্রাম সংস্থার (সিটিসি) ২৫৭ জন কর্মীর বেতন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে এক দফা বৈঠক হয় মহাকরণে। কিন্তু জট খোলেনি। ওই কর্মীরা চার মাস বেতন পাচ্ছেন না। সরকারের মতে, তাঁদের নিয়োগ ‘অবৈধ’। সোমবার ওই কর্মীরা সংস্থার সদর দফতরে বিক্ষোভ দেখান। পরিবহণমন্ত্রী মঙ্গলবার সংস্থার চেয়ারম্যান, এমডি এবং কর্মী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে মদনবাবু জানান, “বেতন না পেয়ে ওই কর্মীদের কয়েক জন আদালতে গিয়েছেন। বিষয়টি বিচারাধীন। এ কারণে এখনই তাঁদের বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ ব্যাপারে যে ‘আইনি সীমাবদ্ধতা’ রয়েছে, তা কাটানোর পথ খুঁজতে সরকারি আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.