যে কেউ এসে চাইলেই বিধায়কেরা যে ভাবে রাজ্যের বাসিন্দা বলে ঢালাও শংসাপত্র দিয়ে দেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কলকাতা হাইকোর্ট।
গত ১৩ অক্টোবর বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে বনগাঁয় ১১ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃতেরা কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানান। বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। কিন্তু শুনানির সময় কোর্টের কাছে জমা দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, ধৃতদের কাছে বনগাঁ (উত্তর) বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের দেওয়া শংসাপত্র রয়েছে। ঝাউডাঙা পঞ্চায়েত প্রধানের দেওয়া শংসাপত্রও রয়েছে। বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত প্রধান নিজেদের প্যাডে তাঁদের ‘এলাকার বাসিন্দা’ বলে লিখেছেন। অথচ পুলিশের দাবি, তাঁরা বাংলাদেশ থেকে বেআইনি ভাবে এ দেশে ঢুকেছেন। পুলিশের কাছে তার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণও রয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ এর পরেই বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্রকে ডেকে পাঠান।
মঙ্গলবার মামলাটি উঠলে বিচারপতি অসীম রায় বলেন, বিষয়টি যথেষ্ট আশঙ্কার। বিধায়কেরা যদি সমস্ত দিক খতিয়ে না দেখে শংসাপত্র দেন, তা হলে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। অনিন্দ্যবাবুও মেনে নেন, চাইলেই ঢালাও শংসাপত্র দেওয়ার অভ্যাস বিধায়কদের রয়েছে। পুলিশ আদালতকে জানিয়েছে, তদন্তকারী অফিসারেরা ঝাউডাঙার পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছেন। ওই পঞ্চায়েত প্রধান দাবি করেছেন, ওই সব শংসাপত্র তিনি দেননি। শংসাপত্র জাল করা হয়েছে। বিধায়ক বিশ্বজিৎবাবুর সঙ্গেও দেখা করেছে পুলিশ। বিধায়ক বলেছেন, তিনি এলাকার বাসিন্দা বলে অনেককে শংসাপত্র দিয়েছেন ঠিকই। তবে এই বিশেষ মামলাটিতে দাখিল হওয়া শংসাপত্রগুলি তাঁর দেওয়া কি না, প্রতিলিপি দেখে তা বলা সম্ভব নয়। আসল শংসাপত্র দেখাতে হবে।
আসল শংসাপত্র দেখিয়ে বিধায়কের বক্তব্য জেনে আদালতকে তা জানাতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। অনিন্দ্যবাবুকে বিধানসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বলেছেন তিনি। যদি দেখা যায়, ওই শংসাপত্র জাল নয়, তা হলে তিনি বিধানসভার অধ্যক্ষকেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হবে। শুক্রবার অনিন্দ্যবাবু অধ্যক্ষের মতামত আদালতকে জানাবেন। |