দলীপ জিতে ইতিহাসের সরণিতে পূর্বাঞ্চল
লীপ ট্রফির একান্ন বছরের ইতিহাসে যা কোনও দিন কখনও হয়নি, মঙ্গলবার মাঝ-দুপুরে ঠিক সেটাই ঘটে গেল। মধ্যাঞ্চলকে তাদের ডেরা ইনদওরের হোলকার স্টেডিয়ামে ইনিংস ও ২০ রানে উড়িয়ে প্রথম বার দলীপ ট্রফি জিতে নিল পূর্বাঞ্চল। সেই ঐতিহাসিক জয় এল বাংলার ছেলেদের হাত ধরে।
‘হাত’ বলতে তিন জন। ব্যাটিংয়ে ঋদ্ধিমান সাহা আর বোলিংয়ে অশোক দিন্দা-সামি আহমেদ। দলীপ ফাইনালে বাংলা থেকে তাবড়-তাবড় ক্রিকেটার যেমন খেলেছেন, তেমনই অধিনায়কত্বও করেছেন অনেকে। সেই তালিকায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আছেন, আছেন দিলীপ দোশি। রঞ্জি জয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় দলীপ ফাইনাল খেলেছেন দু’বার। কিন্তু ঋদ্ধি-দিন্দার মতো কেউই ইতিহাসের সরণিতে ঢুকে পড়তে পারেননি। পাঁচবার ফাইনাল খেলেও কখনও জেতেনি পূর্বাঞ্চল। কেন? সম্বরণের ব্যাখ্যা, “হবে কী করে? আমাদের সময় মনে হত অবশিষ্ট ভারতীয় টিম খেলছে। কারও সঙ্গে কারও যোগাযোগ নেই।”
জয় যে আসছে, সেটা ম্যাচের তৃতীয় দিন থেকেই স্পষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু জয় যে ইনিংস ও ২০ রানে আসবে, ভাবা যায়নি। দিন্দা-সামি যথারীতি দ্বিতীয় ইনিংসেও ভয়ঙ্কর। দু’ইনিংস মিলিয়ে সামির উইকেটসংখ্যা আট, দিন্দার সাত। তার চেয়েও বড়, মরসুমে দিন্দার উইকেট সংখ্যা ৫৯! যা কি না দেশে সর্বোচ্চ। তবে বোলিংয়ে এমন দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্সের হয়তো কোনও মূল্যই থাকত না ঋদ্ধিমান সাহার দুরন্ত ১৭০ রানের ইনিংসটা না থাকলে। অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেই দৌড়তে হয়েছে দলীপ খেলতে। আর ওই সেঞ্চুরি এল কখন? না, যখন দলের ব্যাটিং ধুঁকছে।
ঋদ্ধি দিন্দা সামি
“আসলে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে নেটে জাহির খান, উমেশ যাদবকে খেলেছি। তা ছাড়া ওখানকার উইকেটে বাউন্স অনেক বেশি ছিল। ওই টোটকা কাজে লেগেছে,” ইনদওর থেকে এ দিন ফোনে বলছিলেন ঋদ্ধি। সঙ্গে যোগ করলেন, “এটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছে যে, বাকিরা যা পারেনি, সেটা করতে পেরে ভাল লাগছে। ম্যাচের সেরা আমি হয়েছি ঠিকই, কিন্তু গোটা টিমেরই এই পুরস্কারটা পাওয়া উচিত ছিল। অসম্ভব ভাল বোলিং করল দিন্দা, সামি।”
রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা যায়নি এক চুলের জন্য। সামনের বার হবে? ঋদ্ধি উত্তর দেন, “এ বার আমি খেলিনি অনেক ম্যাচে। তা ছাড়া মুখে বলে লাভ নেই। মাঠে করে দেখাতে হবে।”
ঘোর কাটছে না দিন্দারও। “জানেন, এ বার মরসুমের শুরু থেকে খাটছিলাম। স্পট বোলিং কাকে বলে সেটা রামন-স্যারের কাছ থেকে শিখেছিলাম,” ফোনে বলছিলেন দিন্দা। একটু থেমে ফের বললেন, “ভাবতেই পারছি না, এই মরসুমে সবচেয়ে বেশি উইকেট আমার। সবাইকে ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য।”
আর সামির সঙ্গে তাঁর জুটি? “ও তো নতুন। কিন্তু ভাল পেস আছে। আমি চেষ্টা করি, ওকে গাইড করতে। ও বল করতে এলে মিড অন বা মিড অফে চলে যাই। বলে দিই, কোন ব্যাটসম্যানের ওষুধ কী?” বলছিলেন দিন্দা। দলীপ ফাইনালই সামি-র টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ ছিল। তিনিও বললেন, “মাঠে ইশারাই যথেষ্ট আমাদের জন্য।”
সিএবি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, বিজয় হাজারে (রঞ্জি একদিনের টুর্নামেন্ট) চলার সময় পূর্বাঞ্চলের সব টিমকে নিয়ে পার্টির বন্দোবস্ত হচ্ছে। যা কলকাতায় শুরু হচ্ছে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে। ঋদ্ধি বলছিলেন, “রঞ্জি ওয়ান ডে-তে সাদা বলে খেলা। ফিরেই প্র্যাক্টিসে নামতে হবে।” আর দিন্দার বক্তব্য, “টি টোয়েন্টি জিতেছি। আমাদের ওয়ান ডে টিমটাও ভাল। তা ছাড়া দাদি ক্যাপ্টেন।”
তা হলে ঋদ্ধিদের ‘কোরাস’ কী দাঁড়াচ্ছে? এখনই উৎসব নয়, বরং নতুন যুদ্ধের দামামা বাজাও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: মধ্যাঞ্চল: ১৩৩ ও ২১৭ (দিন্দা ৩-৯৪, সামি ৪-৫০) পূর্বাঞ্চল: ৩৭০ (ঋদ্ধি ১৭০)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.