বরাক উপত্যকায় ভাষা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সরব হয়েছে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। প্রতিবাদ জানাতে সংগঠনের কাছাড় জেলা কমিটি বেশ কিছু কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে।
সম্মেলনের কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী জানান, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ১৯৬১ সালে প্রাণ দেন ১১ জন। সেই ভাষা-শহিদদের আত্মবলিদানের সূত্রেই বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ জন্য ভাষা আইনের সংশোধন ঘটানো হয়। কিন্তু তৈমুরের অভিযোগ, পাঁচ দশক পরেও এখানে আমলারা সরকারি কাজকর্ম অসমিয়া ভাষায় চালাচ্ছেন। পাঠ্যবইয়ে বাংলার ফাঁকে অসমিয়া শব্দ ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকী মামলার যে কেস ডায়েরি তৈরি করা হয়, তদন্তকারী পুলিশ অফিসার অসমিয়ায় তা লিখে বাদীর সই সংগ্রহ করেন। ফলে আদালতে উঠে অনেকেই বলেন, অসমিয়ায় কী লেখা হয়েছিল বুঝতে না-পেরে তখন সই করেছেন। কেস ডায়েরির বয়ানও পরে অনেকেই অস্বীকার করেন। এ ছাড়াও বরাক জুড়ে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার হোর্ডিং ও প্রচারপত্রেও দেখা যাচ্ছে বাংলার বদলে অসমিয়া ভাষা।
এই প্রবণতা রোধে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন বরাক উপত্যকার সরকারি ভাষা নিয়ে ছোট ফোল্ডার (পুস্তিকা) প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপক সেনগুপ্ত জানান, বিশেষ করে বহুজাতিক ও জাতীয় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি তাদের পণ্যসামগ্রীর প্রচার যাবতীয় কাজকর্ম যাতে বাংলায় করে, সে জন্য ফোল্ডারটি ওই সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিলি করা হবে। এ জন্য ফোল্ডারটি বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতেও মুদ্রিত হবে।
পাশাপাশি, জেলা ও দায়রা বিচারক-সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলবেন সম্মেলনের নেতারা। এই উপত্যকায় কেস ডায়েরি, প্রভৃতি যাতে বাংলাভাষাতেই লেখা হয় সেই আর্জি জানিয়ে স্মারকলিপিও দেওয়া হবে।
সম্মেলনের নেতারা জানান, সাত মাস আগেও অনুরূপ স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। দিনটি ছিল ১৫ জুন। তাঁরা সরকারি কাজে বাংলা ভাষা ব্যবহারের আর্জি জানিয়ে দেখা করেছিলেন জেলা বিচারকদের সঙ্গে। |