রোজ একই ধরনের কাজ করে ওরা। হাতযশও ভালই। তবু সে কাজই ‘ভাল ভাবে’ করার লোভ করে যে ফাঁদে পড়তে হবে, তা কে জানত!
সকালের ব্যস্ত সময়ে দামি গয়নাগাঁটি পরে মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়েছিলেন কয়েক জন মহিলা। যেন ট্রেনের অপেক্ষা করছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আশপাশে ঘুরতে শুরু করে কিছু যুবক এবং বিশেষ কায়দায় সকলে মিলে ঘিরে ফেলে ওই মহিলাদের। কিন্তু ‘কাজ’ করতে এগোতেই ঘটে বিপত্তি।
নিজেদের কাজ সামলাতে গিয়ে তারা বুঝতেই পারেনি কখন তাদেরও ঘিরে ফেলেছে সাধারণ পোশাকে থাকা পুলিশ। গয়না ছিনতাই করার জন্য এগোতেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে চার দুষ্কৃতী। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে মহানায়ক উত্তমকুমার (টালিগঞ্জ) মেট্রো স্টেশনে।
মেট্রো সূত্রে খবর, এ দিন সকালে যে মহিলারা গয়না পরে স্টেশনে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁরা রেলপুলিশের কর্মী। আশপাশেই সাধারণ পোশাকে ছিলেন আরও কিছু পুলিশকর্মী। ছিনতাইকারীদের গয়নার ‘টোপ’ দিয়ে ধরার জন্যই সকলে অপেক্ষা করছিলেন ওই মেট্রো স্টেশনে।
মেট্রো সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছিল ওই স্টেশনে। পরপর কয়েক দিন ভিড় মেট্রোয় উঠতে গিয়ে খোয়া যায় কয়েক জন মহিলার হার। এর পরেই দুষ্কৃতীদের দলটিকে ধরতে তৎপর হন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
প্রথমে ক্লোজড সার্কিট টিভির ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয় ছিনতাইকারীদের। দেখা যায় একটি দলই রোজ এই কাজ করছে। তার পরে রেলপুলিশের কয়েক জন কর্মীকে নিয়ে গড়া হয় একটি বিশেষ টাস্ক ফোর্স। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “ওই টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন ৮ জন মহিলা ও ১০ জন পুরুষ। ছিনতাইয়ের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ বারবার দেখানো হয় তাঁদের। ফোর্সের সকলেই ভাল করে চিনে নেন ছিনতাইকারীদের।” এর পরেই শুরু হয় ‘অপারেশন’।
রেলপুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম হল মহম্মদ লালু, আব্দুল শেখ, রামবাহাদুর বড়ুয়া ও আরফত সর্দার। তাদের বাড়ি সোনারপুর ও ক্যানিং এলাকায়। ধৃতদের কাছে একটি সোনার হার ও হাতঘড়ি মিলেছে। ধৃতদের রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় রেলপুলিশ। প্রত্যুষবাবু বলেন, “পরপর ছিনতাই হওয়ায় উদ্বিগ্ন ছিলাম। এই টাস্ক ফোর্স এখন বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে নজরদারি চালাবে।” |