পাড়ার ক্লাবে অসামাজিক কাজকর্মের প্রতিবাদ করায় প্রহৃত হলেন এক গৃহবধূ। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান শহরের বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ার নজরুল পল্লিতে। প্রহৃত গৃহবধূর নাম মমতাজ খান। তাঁর অভিযোগ, প্রায় ৩০-৪০ জন লোক তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে মারধর করেছে। এতে তাঁর ডান হাতের কব্জি ভেঙেছে। রডের আঘাতে গুরুতর চোট পেয়ে স্বামী মহম্মদ ফয়জুল আলি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
মমতাজের আরও অভিযোগ, বর্ধমান থানা তাঁর অভিযোগ নেয়নি। কারণ, সিপিএমের মদতে পুষ্ট এই ক্লাবটির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নিতে বারণ করে দিয়েছেন শহরের সিপিএমের নেতারা। তবে সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য তথা বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান আইনুল হক বলেছেন, “ওই ক্লাবটি মোটেই সিপিএমের মদতে পুষ্ট নয়। ওই মহিলার বাড়িতে হামলা যারা চালিয়েছে তারা তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর লোক। তাদের আমরা বাঁচাতে যাব কেন?” |
মমতাজের অভিযোগ, তাঁদের পাড়ার একটি পার্কের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা ওই ক্লাবটিতে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কাজকর্ম চলে। ক্লাবটি এলাকার কয়েকটি বাড়ির লাগোয়া। ক্লাবে প্রতিদিনই প্রচুর লোকজনের আসা ও হইহল্লা লেগেই আছে। তাতে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় পাড়ার অপর গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম ক্লাবে গিয়ে কিছুদিন আগে প্রতিবাদ করেন। তাঁকে অপমান করা হয়। এমনকী বাড়িতে গিয়ে মারধরের চেষ্টা করা হয়। তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় ক্লাবের লোকেরা তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ক্লাবটিতে তালা বন্ধ। ক্লাবের দুই সদস্য সেখ পিন্টু ও সেখ রাজেশ জানিয়ে দেন, এই ক্লাবটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। তাঁদের সিপিএমের সমর্থক বলে অকারণে চিহ্নিত করা হচ্ছে। মমতাজ খানের বাড়িতে ঢুকে কারা হামলা চালিয়েছে, তা তাঁরা জানেন না।
শহরের তৃণমূল নেত্রী বিপাশা বিশ্বাসের দাবি, “সিপিএমের মদতে পুষ্ট ওই ক্লাবের লোকেরাই মমতাজের বাড়িতে ঢুকে সোমবার সকালে হামলা চালিয়েছে। বাড়িটির ঘরের ভিতরের আসবাবপত্রের ক্ষতি করা হয়েছে। বিকেলে বর্ধমান থানায় আমি মহিলাদের নিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানা সেটা নিতে অস্বীকার করে। গোটা ঘটনার কথা দলের নেতাদের, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে।”
বর্ধমান থানার আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, “থানায় মহিলাদের অভিযোগ জানাতে আসার কথা আমি জানি না। কেন ওঁরা অভিযোগ না নেওয়ার কথা বলেছেন, তা-ও বুঝতে পারছি না। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মহিলারা থানায় এলে ওঁদের অভিযোগ অবশ্যই নেওয়া উচিত।” |