একটি ইটভাটার মালিকানা নিয়ে বিবাদকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হল কালনার পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের হাসপুকুর এলাকায়। প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা শহরের সোনাপট্টির বাসিন্দা নিমাই কুণ্ডুর স্থানীয় হাসপুকুর এলাকায় একটি ইটভাটা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে নিমাইবাবুর স্ত্রী গায়েত্রীদেবী অভিযোগ করেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে তিনি ও তাঁর তিন মেয়ে ইটভাটারটির মালিকানা পান। |
এই ইটভাটার মালিকানা নিয়েই বিবাদ। মঙ্গলবার ছবিটি তুলেছেন কেদারনাথ ভট্টাচার্য। |
তবে গত চার বছর ধরে তাঁর ছোট মেয়ের স্বামী দেবজ্যোতি দে ইটভাটাটি নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। তিনি বারবার বাধা দিয়েও কোনও কাজ হয়নি। সোমবার দুপুরে পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক করেন। হাজির ছিলেন কালনা ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি প্রণব রায়ও। তবে বৈঠকটি ফলপ্রসূ না হওয়ায় ফের বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে ইটভাটা ছেড়ে যেতে চাননি গায়েত্রীদেবী এবং তাঁর দুই মেয়ে সুজাতা ও সুনন্দা। বিকেলে এক দল স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তাঁদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। বর্তমান মালিকের লাগানো তালা ভেঙে ইটভাটার অফিসঘরে নতুন তালা লাগিয়ে দেন। চাবিটি দিয়ে দেওয়া হয় গায়েত্রীদেবী ও তাঁর দুই মেয়েকে।
এ দিকে, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ইটভাটায় যান পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা জগবন্ধু মণ্ডল। তিনি কুণ্ডু পরিবারের সদস্যদের কাছে দাবি করেন, বুধবার ব্লক অফিসে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে জানানো সত্ত্বেও কেন এ ভাবে তালা লাগানো হল? |
এর মধ্যেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লোকজন বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়, ইটভাটার অফিস ও সংলগ্ন দ্বিতল ভবনে দু’পক্ষই যেতে পারবেন। মঙ্গলবার দেবজ্যোতিবাবু বলেন, “অফিসঘরের তালা ভেঙে গোলমাল বাধানো মোটেও ঠিক হয়নি। ইটভাটার মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষই আদালতে মামলা দায়ের করেছে। বর্তমানে অফিসঘর সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।”
যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। কালনা ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি প্রণববাবুর দাবি, “ইটভাটার মালিকানা নিয়ে উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে আমি বৈঠক করি। প্রথম দিন সমস্যার জট না খোলায় ১৭ ফেব্রুয়ারি ফের আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত হয়। এ ব্যাপারে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।” |