শিক্ষকের শাসন: চড়ে কান থেকে রক্তপাত ছাত্রীর
ক্লাসে প্রত্যেকের নাম ডেকে ছাত্রছাত্রীদের হাজিরা পরীক্ষা করে দেখছিলেন শিক্ষক। নাম ডাকার সময়ে উঠে দাঁড়িয়ে এক ছাত্রী ‘ইয়েস স্যার’ না-বলায় শিক্ষক চড় মেরে তার কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সুমিতা রাজবংশী নামে চতুর্থ শ্রেণীর ওই ছাত্রীর বাঁ কান দিয়ে রক্ত বার হতে শুরু করলে মালদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মারধরের ঘটনাটি ঘটে বুধবার বেলা ১১ টা নাগাদ মালদহ থানার আদিনার মহেশকুড়ি গ্রামের একটি বেসরকারি নার্সারি স্কুলে। এই ঘটনায় এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক মতিলাল রাজবংশী গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে ছাত্রীর পরিবার এই ব্যাপারে পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। মালদহ থানার আইসি বিনোদ বিহারী ভট্টাচার্য বলেছেন, “শিক্ষকের মারে এক ছাত্রীর কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার খবর শুনেছি।
জখম সুমিতা। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়
এখনও পর্যন্ত কেউ এব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে।” অভিযুক্ত শিক্ষক মতিলাল রাজবংশী মারধরের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তবে তাঁর দাবি, “রোল কলের সময়ে ছাত্রীটি সাড়া না-দেওয়ায় রাগ হয়ে গিয়েছিল। শাসন করার জন্য চড় মেরেছিলাম। এমন ঘটনা ঘটে যাবে বুঝতে পারিনি। আমিই প্রথম ওষুধ কিনে দিই।” মালদহ সদর হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ বিক্রমজিত ধর বলেন, “কানের ভিতরে রক্তপাত সাময়িকভাবে বন্ধ আছে। তবে কানের ভিতরে এখনও প্রচুর পরিমাণে জমাট রক্ত থাকায় ঝিল্লি দেখা যাচ্ছে না। সিটি স্ক্যান করতে বলা হয়েছে। সিটি স্ক্যান রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বলা যাবে কানের বতর্মান অবস্থা কেমন আছে।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিথিল সরকার বলেন, “ছাত্রীটিকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। শিক্ষকের থাপ্পড়ে ছাত্রী জখমের পরেই স্কুলের পরিচালন কমিটিকে জানিয়েছি। এই ঘটনার পর স্কুল পরিচালন কমিটিই ঠিক করবে ওই শিক্ষককে আর স্কুলে রাখা হবে কি না।” ছাত্রীর বাবা পেশায় দিনমজুর নরেন রাজবংশী জেলার বাইরে রয়েছেন। দিনমজুর হয়েও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে না দিয়ে দুই মেয়ে সুমিতা ও মমতাকে বেসরকারি নার্সারি স্কুলে দিয়েছেন। দু’জনেই ওই বেসরকারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। অন্যন্য দিনের মতো বুধবার দুই বোন স্কুলে যায়। সুমিতার সহপাঠী খুশীলতা রাজবংশী, কৃষ্ণা রাজবংশী, তন্ময় সরকাররা বলে, “প্রথম ক্লাসে মতিলাল স্যর ঢুকে রোল কল করতে থাকেন। রোল কল হয়ে যাওয়ার পরেও সুমিতা “ইয়েস স্যার” না বলায় খেপে গিয়ে কানের পাশে থাপ্পড় মারতে থাকেন। সুমিতার কান দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করলে স্যার মার বন্ধ করে।” অভিযুক্ত শিক্ষকের সহকর্মীদেরও দাবি, মতিলাল রাজবংশী ওই ছাত্রীকে শাসন করতে গিয়েছিলেন। যা ঘটেছে সেটা দুঘর্টনা। এ দিন সদর হাসপাতালে মেয়ের পাশে বসে সন্ধ্যাদেবী বলেন, “স্কুল থেকে ফিরে এসে মেয়ে আমায় কিছুই বলেনি। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় সুমিতার কান দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে শুরু করায় আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কী হয়েছে জানতে চাইলে ছোট মেয়ে স্কুলের সমস্ত ঘটনা জানায়। মেয়ে সুস্থ হলে পুলিশকে সব জানাব। ওই শিক্ষকের শাস্তি চাই। যাতে কেউ ছাত্রছাত্রীদের এ ভাবে না-মারেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.