বর্ষার আগে বানিয়া নদীতে বন্যা রোধের জন্য বাঁধের দাবিতে সরব হয়েছেন ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের মেন্দাবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা। প্রতি বছর বর্ষায় মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বানিয়া নদীর ভাঙন ও বন্যায় প্রচুর টাকার ক্ষয়ক্ষতি হলেও বিষয়টি নিয়ে বর্ষাকালের আগে কোনও কাজ না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। কালচিনি ব্লকের বিডিও থেন্ডুপ শেরপা জানান, কালচিনি ব্লকে প্রায় সব কটি নদী বর্ষাকালে ভয়াবহ রূপ নেয়। এতে নদী ভাঙন থেকে কৃষিজমি নষ্ট, ফসলের ক্ষতি লেগেই রয়েছে। মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা বানিয়া নদীর জলোচ্ছাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রতিবছর বেড়ে চলেছে। মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই এলাকাটি বন্যা প্রবণ বলে চিহ্নিত। চলতি আর্থিক বছরে কালচিনি ব্লকে পঞ্চায়েত সমিতির তরফে ১৪ টি প্রকল্পের মাধ্যমে নদী ভাঙন ও বন্যা রোধের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। যার বাজেট প্রায় দুই কোটি টাকা। এই প্রকল্পের অর্ধেকটাই মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বানিয়া নদীর ভাঙন রোধে ব্যয় করা হবে। আসন্ন বর্ষার আগেই বানিয়া নদীর বাঁধ নির্মাণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করা হবে। পঞ্চায়েত প্রধান অভিজিৎ নার্জিনারি জানান, প্রতি বছর বর্ষার সময় ভাঙন রোধের কাজে হাত দেয় প্রশাসন। বর্ষার সময় তা নষ্ট হয়ে যায়। কাজের কাজ কিছুই হয় না। মেন্দাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উত্তর মেন্দাবাড়ি, দক্ষিণ মেন্দাবাড়ি, পশ্চিম সাঁতালি, দক্ষিন সাঁতালি ও সাঁতালি নাকাডালা-সহ বেশ কিছুটা এলাকা প্রতি বছর বানিয়া নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, “এ বার বর্ষার আগে ভাঙন রোধের কাজ শেষ না-হলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” ১৯৯৩ সালের ভয়াবহ বন্যায় বানিয়া নদীর উপর তৈরি আঠাশলাখি বাঁধ নষ্ট হওয়ার পরে প্রশাসন তা নিয়ে সেভাবে উদ্যোগী না-হওয়ায় ভাঙন রোখা সম্ভব হচ্ছে না। প্রতি বছর কয়েক একর কৃষি জমি নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। গৃহহীন হয়ে পড়ছেন বহু মানুষ। পশ্চিম সাঁতালির বাসিন্দা তথা এলাকার প্রাক্তন প্রধান বিজয় শৈব বলেন, “কয়েকবার পরিকল্পনা ছাড়া বানিয়া নদীর উপর নষ্ট হয়ে যাওয়া আঠাশলাখি বাঁধ সংস্কার করা হয়েছিল। তবে তা নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষণ না হওয়ায় কোনও কাজে আসে না। এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী ভাঙন রোখার জন্য মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে প্রশাসন কাজ করলে নদী ভাঙন রোখার পাশাপাশি সেচের ব্যবস্থা সম্ভব।” |