মদের নমুনা পরীক্ষার কাজ থমকে রাজ্যে
মকলের ছাড়পত্র ছিল না। কর্মীরাও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন। এই পরিস্থিতিতে আবগারি দফতরের নির্দেশেই গত অগস্ট মাস থেকে বন্ধ রাজ্য আবগারি দফতরের একমাত্র রাসায়নিক পরীক্ষাগারটি। যার অর্থ, ২০১০ সালের অগস্ট মাসের পর থেকে রাজ্যে যে সব নতুন মদ তৈরি হয়েছে, তার গুণমান পরীক্ষার কাজ বন্ধ।
ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরে বিষমদে মৃত্যু হয়েছে ১৭২ জনের। ওই মদের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হয় বেলেঘাটায় রাজ্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে। মদে বিষক্রিয়ার অভিযোগ উঠলে তা পাঠানো হয় বেলেঘাটায়। কিন্তু যে সব মদ বাজারে ছাড়ছে কোম্পানিগুলি, তার নমুনা নিয়মিত পাঠানোর কথা আবগারি দফতরের এই রাসায়নিক পরীক্ষাগারেই। যে সমস্ত বেআইনি দেশি-বিলিতি মদ, চোলাই আটক করা হয়, তার নমুনাও পাঠানোর কথা এখানে।
জমা হচ্ছে মদের নমুনা। ছবি: সুদীপ ঘোষ
কিন্তু ট্যাংরার ৪৬ নম্বর ক্রিস্টোফার রোডের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে কাজ বন্ধ কেন?
পরীক্ষাগারটি আগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রকের অধীনে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরের মধ্যে ছিল। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে পরীক্ষাগারটিকে ট্যাংরার বর্তমান বাড়িতে নিয়ে আসে আবগারি দফতর। কিন্তু পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে পূর্ত দফতর ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ দু’জনেই জানিয়ে দেয়, বাড়িটি ‘পরীক্ষাগার’ হিসাবে ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। কিন্তু ওই দুই দফতরের বিনা অনুমতিতেই ক্রিস্টোফার রোডের বাড়ি থেকে কাজ শুরু হয়ে যায়। বছর কুড়ির পুরনো বাড়িটি আসলে একটি পাঁচতলা আবাসিক ফ্ল্যাট। তিনটি ছোট ঘর, একটি রান্নাঘর ও একটি শৌচাগার রয়েছে। মেঝে ও ছাদ ফাটা। দেওয়াল খসে পড়ছে। জল বের হয় ফাটা পাইপ থেকে। তার মধ্যেই গ্যাস, বার্নার, রাসায়নিক, নমুনা, বিভিন্ন অ্যাসিড, কাচের গ্লাস প্রভৃতি সরঞ্জাম দিয়ে কাজ করতে হয় কর্মীদের। হাজার হাজার বোতল দেশি-বিদেশি মদও থাকে সব সময়। এ সবই ভয়ানক দাহ্য। লিফ্ট নেই। আশপাশে ঘনবসতি। বিপদ হতে পারে যে কোনও সময়।
প্রাথমিক ভাবে দমকলের ছাড়পত্র মিলেছিল। কিন্তু ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে দমকল কর্মীরা তদন্তে এসে জানতে পারেন, ওই বছরেরই জানুয়ারি মাসে পরীক্ষাগারের অগ্নি-নির্বাপণ সংক্রান্ত লাইসেন্স বাতিল হয়ে গিয়েছে। দমকল নোটিস দিয়ে জানায়, বাড়িটি গবেষণার কাজের জন্য অনুপযুক্ত। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা হতে পারে। পনেরো দিনের মধ্যে ‘বিকল্প’ ব্যবস্থা নিতে বলা হয় ওই নোটিসে। জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘আগুন লাগতে পারে’ এমন কোনও কাজ করা যাবে না ওই বাড়ি থেকে। তারপরেও এই বাড়ি থেকেই কাজ চলছিল। নিজেদের ‘নিরাপত্তার অভাব’-এর কথা উপরমহলে বারবার জানিয়েও সুরাহা পাননি ওই পরীক্ষাগারের কর্মীরা। ২০১১ সালের জুলাই মাসে তাঁরা সমস্ত ঘটনা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন। ২৩ অগস্ট থেকে আবগারি দফতরের রাজ্য কমিশনারের নির্দেশে পরীক্ষানিরাক্ষার কাজ বন্ধ হয়ে যায় ওই বাড়িতে।
দফতরের ডেপুটি কেমিক্যাল এগজ্যামিনার সুব্রত হাজারি বলেন, “এমনিতেই পরীক্ষাগারের কোনও অনুমতি ছিল না। তারপরে দমকল লাইসেন্স বাতিল করার পরেও পরীক্ষার কাজ চলছিল। এখন তা-ও বন্ধ। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনে আমরা জানিয়েছি, পরীক্ষাগারটি যেন সমস্ত নিয়ম মেনে বৈধ ভাবে চলে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.