দখিনা বাতাস রুখে ফের শীত আজ বা কাল
বার ঘুরে গেল হাওয়া!
এবং আর ‘যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো’র পিছুটান নয়। আপাতত দিন কয়েক ‘যাবই না’ বলে ইঙ্গিত দিয়ে দিল শীত। শুধু তা-ই নয়, এর পরেও চলতি মরসুমেই আরও এক দফা খেল্ দেখাতে চায় সে।
স্বাভাবিক নিয়মে দক্ষিণের মলয়বাতাসকে পথ ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়ায় শীত। এ বারেও সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সাতসকালে একটা ঝড়ই ঘুরিয়ে দিল হাওয়ার অভিমুখ। ঠিক ঝড়ও নয়, সেটা ছিল একটা খণ্ডযুদ্ধ। দু’টি বিপরীতমুখী বায়ুপ্রবাহের পরস্পরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াই।
ঝাড়খণ্ডে ‘হাই ব্লক’ বা উচ্চচাপ এলাকা তৈরি হওয়ায় গত চার দিন ধরে বসন্তের দখিনা বাতাস বয়েছে গোটা দক্ষিণবঙ্গে। আর সেই ‘উচ্চচাপ এলাকা’য় বাধা পেয়ে এ রাজ্যে প্রবেশের আগেই ফিরে যেতে হয়েছে উত্তুরে হাওয়াকে। কিন্তু তখনকার মতো ফিরে গেলেও সে যে হার মানেনি, বৃহস্পতিবারেই তার প্রমাণ মিলেছে। আবহবিদেরা জানান, পূর্ণশক্তি নিয়ে এ দিন ভোরে ‘উচ্চচাপ এলাকা’র প্রতিরোধ পেরিয়ে পরিমণ্ডলে ঢুকে পড়েছে সেই উত্তুরে বাতাস। তার পুনরাগমন অবশ্য খুব সহজ হয়নি। তাকে প্রাণপণে বাধা দিতে চেয়েছিল ঝাড়খণ্ডের সেই ‘উচ্চচাপ এলাকা’ থেকে তৈরি দখিনা বাতাস। বেধে যায় ধুন্ধুমার লড়াই। শেষ পর্যন্ত জিতে যায় উত্তুরে হাওয়া।
সেই হিমেল হাওয়াকে সঙ্গী করে আজ, শুক্রবারেই শীত পঞ্চম ইনিংস শুরু করে দিতে পারে রাজ্যে। এবং শুধু পঞ্চম নয়। চলতি মরসুমে শীত যদি ষষ্ঠ ইনিংস খেলে দেয়, তা হলেও তাঁরা আর আশ্চর্য হবেন না বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।
কী ভাবে ফিরতে চলেছে শীত? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, উত্তর ভারতে শৈত্যপ্রবাহের জন্য উত্তুরে হাওয়ার শক্তি বেড়ে গিয়েছে। তাই নতুন উদ্যমে সেই হিম-হাওয়া ঝাড়খণ্ডের ‘উচ্চচাপ এলাকা’র বাধা ঠেলে এ দিকে আসতে পেরেছে। উত্তর ভারতের ওই শৈত্যপ্রবাহের মূলে আছে কাশ্মীর থেকে আসা একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। গোকুলবাবুর ব্যাখ্যা, জম্মু-কাশ্মীর দিয়ে ফের আরও এক দফা তীব্র পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢুকছে এ দেশে। তার জেরে আরও এক দফা শৈত্যপ্রবাহ চলবে উত্তর ভারতে। তার প্রভাবে ফের কয়েক দিনের জন্য শীত পেতে পারে দক্ষিণবঙ্গ।
ঝাড়খণ্ডের ‘উচ্চচাপ এলাকা’র দাপটও নেহাত কম নয়। তার জেরে গত কয়েক দিন যে-ভাবে দখিনা বাতাস বয়েছে, তাতে দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে অস্বাভাবিক হারে। সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর বৃহস্পতিবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে হয় ২০.৬ ডিগ্রি। যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ডিগ্রি বেশি। আবহাওয়ার এ-হেন ব্যবহারে মনে হয়েছিল, শীত বোধ হয় এ বারের মতো দক্ষিণবঙ্গ থেকে সত্যি সত্যিই বিদায় নিল।
কিন্তু আসলে তা নয়। আবহবিদরা জানান, কাল, শনিবারেই ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও নীচে নেমে যেতে পারে পারদ। সেই সুবাদে ৩-৪ দিন থাকতে পারে শীতের আমেজ। তার পরে ফের আকাশ মেঘলা হবে। তাপমাত্রাও বাড়তে থাকবে তার জেরে। অবশ্য তাতেই যে শীতের পালা শেষ হয়ে যাচ্ছে, তা নয়। আবহবিদদের আশা, পরবর্তী পর্যায়ে কাশ্মীর থেকে আসা অন্য একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জন্য ফের এক দফা শীত পেতে পারে দক্ষিণবঙ্গ।
আবহবিদদের মতে, সেটা হবে অস্বাভাবিক ঘটনা। তবে আসতে দেরি করা থেকে শুরু করে বিদায় নিতে গিয়েও বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে শীত তো এ বার অস্বাভাবিক আচরণই করে চলেছে!



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.