শব্দবাজি ফাটিয়ে শোভাযাত্রা করছিলেন বরযাত্রীরা। গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ তার প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, তাতে কর্ণপাত করেননি বরযাত্রীরা। ওই রাতেই আগুনে ছাই হয়ে গেল গ্রামের এক চাষির ধানের গোলা। বরযাত্রীদের বাজিতেই এই বিপর্যয় হয়েছে বলে অভিযোগ ওই চাষির। আগুন নেভাতে গিয়ে কিছু ‘মদ্যপ’ যুবক, যাঁরা বরযাত্রী, তাঁদের হাতে দমকলকর্মীরা নিগৃহীত হন বলেও অভিযোগ। ঘটনাটি পুরুলিয়া ১ ব্লকের গোলামারা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মহুদা গ্রামের। বুধবার রাতের ওই ঘটনায় দমকলের তরফে পুরুলিয়া মফস্সল থানায় তাদের কর্মীদের নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। |
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে ওই গ্রামে বিয়ে ছিল রবিলাল সিংহ ও সত্যেন সিংহের মেয়ের। বরযাত্রীরা এসেছিলেন পাড়া থানার মাধবপুর গ্রাম থেকে। ওই গ্রামের ক্ষেত্রমোহন সিংহের দুই ছেলের সঙ্গে বিয়ে ছিল রবিলাল ও সত্যেনবাবুর দুই মেয়ের। দু’টি বিয়ের ফলে বরযাত্রীর সংখ্যাও ছিল বেশি। প্রায় ১৫০-২০০ জন বরযাত্রী এসেছিলেন মহুদা গ্রামে। অভিযোগ, বরযাত্রীরা শোভাযাত্রা করে শব্দবাজি ফাটাতে ফাটাতে গ্রামে ঢোকেন। গ্রামবাসীরা তাঁদের বারণ করেছিলেন গ্রামের মধ্যে শব্দবাজি ফাটাতে। বলেছিলেন, বাইরে গিয়ে ফাটাতে। কিন্তু কান দেননি তাঁরা। গ্রামের মধ্যেই তেমাথা মোড়ে বাড়ি সম্পন্ন চাষি রামজীবনলাল সিংহের। তাঁর দাবি, “আমার বাড়ির চত্বরেও বাজি ফাটানো হয়। ওরা শব্দবাজি ছাড়াও তুবড়ি, রকেট ফাটাচ্ছিল। ওই বাজির ফুলকি থেকেই আগুন ধরে যায় উঠোনে থাকা ধানের গোলায়।”
গ্রামবাসীরাই প্রথমে পাম্প চালিয়ে পুকুর থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। খবর দেওয়া হয় দমকলকেও। পুরুলিয়া শহরের দমকল কেন্দ্র থেকে একটি ইঞ্জিন রাত পৌনে ১২টা নাগাদ গ্রামে যায় আগুন নেভাতে। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও বিশাল পরিমাণ ধান পুড়েছে বলে দাবি রামজীবনলালবাবুর। পুরুলিয়া দমকল কেন্দ্রের ওসি সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, আগুন নেভানোর সময় কিছু মদ্যপ যুবক বাধা দেয় এবং দুই দমকলকর্মীকে মারধর করে। পরে মফস্সল থানায় মুকুল সিংহ-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে দমকল অভিযোগ দায়ের করে।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের ধরতে মহুদা গ্রামে যাওয়া হলেও তাদের খোঁজ মেলেনি। রামজীবনবাবুও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, “গত দু’বছর খরার পরে এ বছর ভাল ধান হয়েছিল। বাজির আগুনে বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। প্রশাসন ক্ষতিপূরণ দিলে কিছুটা আর্থিক সুরাহা হবে।” |