একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বাসিন্দাদের না জানিয়েই কাজ শুরু করেছে পঞ্চায়েত। ফলে কাজ পাননি এলাকার বেশির ভাগ শ্রমিক। এই অভিযোগে তৃণমূলের নেতৃত্বে শ্রমিকরা গ্রাম পঞ্চয়েতে বিক্ষোভ দেখিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন। বৃহস্পতিবার রঘুনাথপুর ২ ব্লকের সিপিএম পরিচালিত মঙ্গলদা-মৌতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতে এই বিক্ষোভ হয়। এ দিন রাত পর্যন্ত পঞ্চায়েতের দরজার তালা খোলা যায়নি। পঞ্চায়েত প্রধান মামনি বাউরি অবশ্য তৃণমূলের তোলা অভিযোগ মানতে চাননি। উৎপল ঘোষ বলেন, “সারা দিন প্রশাসনিক বৈঠকে ছিলাম। বিকেলে শুনেছি। তৃণমূল একটা অভিযোগ পত্র দিয়েছে। পঞ্চায়েতের তালা খোলার চেষ্টা করা হবে। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম স্বাভাবিক করার জন্য প্রয়োজনে সবার সঙ্গে বৈঠক করা হবে।” |
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৌতোড় গ্রামে দধিপুকুর নামের একটি পুকুর ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় সংস্কারের কাজ শুরু করেছে পঞ্চায়েত। অভিযোগ, পুকুর সংস্কারের কাজ শুরু করার আগে এলাকায় কোনও প্রচার করেনি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে পঞ্চায়েত কাজটি শুরু করে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ভবানী বাউরির অভিযোগ, “জনা পনেরো সিপিএম সমর্থককে নিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এলাকার কাজ করতে ইচ্ছুক বাসিন্দারা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। আমাদের সন্দেহ দুর্নীতি ও স্বজনপোষনের জন্যই সিপিএম পরিচালিক পঞ্চায়েত এ ভাবে কাজ শুরু করেছে।” এ দিন সকালে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব কাজ করতে ইচ্ছুক শতাধিক লোকেদের নিয়ে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে যান। প্রধান অনুপস্থিত থাকায় উপপ্রধান রবিলোচন মুখোপাধ্যায়ের কাছে তাঁরা জানতে চান, কেন তাঁদের কাজ দেওয়া হয়নি। উপপ্রধান জানান, প্রধান না থাকায় তিনি কিছু বলতে পারবেন না। এরপরেই উপপ্রধান ও পঞ্চায়েতের কর্মীদের অফিস থেকে বের করে দিয়ে তাঁরা পঞ্চায়েত অফিসের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেন।
শরৎ বাউরি, সুধন বাউরিরা কাজের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা অভিযোগ করেন, “দীর্ঘ দিন ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ পাইনি। পঞ্চায়েতে কাজ চেয়ে আবেদনও করেছিলাম। অথচ, কাজ শুরু হওয়ার পরে আমাদের পঞ্চায়েত কাজ দিল না। কাজ শুরু করার আগেও এলাকায় প্রচার করা হয়নি।”
পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের মামনি বাউরি দাবি করেন, “গ্রাম উন্নয়ন সমিতি ওই পুকুর সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিকল্পনা জমা দিয়েছিল। তারপরেই কাজের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়। নিয়ম মেনেই সব করা হয়েছে। উন্নয়ন সমিতিও কাজ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাজ শুরুর আগে জানিয়েছেন।” বিক্ষোভে ছিলেন তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য তথা পাড়া বিধানসভার সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক মিনু বাউরি। প্রসঙ্গত তিনি এই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম প্রধান। তাঁর অভিযোগ, “উন্নয়ন সমিতির নাম করে এলাকার সিপিএমের নেতারা দুর্নীতি করছেন। তাই উন্নয়ন সমিতির নামে সিপিএম পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত চুপিসাড়ে কাজ শুরু করেছে।” |