‘নিরাপত্তার অভাব’, অস্ত্র জমা দিলেন পুলিশ কর্মীরা
দুষ্কৃতীদের হামলার ভয়ে অস্ত্রশস্ত্র থানায় জমা দিয়েছেন স্পিড বোটের নিরাপত্তা রক্ষীরা! ‘নিরাপত্তার অভাবে’ বোটের এক চালক চাকরিতে ইস্তফা দিতে চান।
উপকূলবর্তী থানাগুলিতে নজরদারি চালানোর জন্য যে উন্নত স্পিড বোটগুলি আনা হয়েছিল, সেগুলির কয়েকটি সামলাতে গিয়েই এই হাল উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার উপকূলবর্তী হেমনগর থানার কর্মীদের। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মেহেমুদ আখতার অবশ্য বলেন, “এ ভাবে ইস্তফাপত্র বা অস্ত্র জমা দেওয়া যায় না। ওখানে কিছু সমস্যা আছে। সেগুলি দেখা হচ্ছে।”
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে তাজ হোটেলে জঙ্গি হামলার পরে জলপথে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের টাকায় কেনা হয় বেশ কয়েকটি উচ্চ গতির ‘ফাস্ট ইন্টারসেপ্টিং বোট’। কিন্তু সেগুলির বেশিরভাগই পরিকাঠামোর অভাব মিটিয়ে কিংবা জ্বালানি-বাবদ প্রচুর খরচ সামলে চালুই করা যায়নি। উপকূলবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়াতে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগরে তৈরি হয়েছিল নতুন থানা। ২০১০ সালের ২১ মে এখানে আনা হয় একটি বোট। ওই বছরেরই ২১ জুলাই এবং ২০১১ সালের ২৫ মে আরও দু’টি উচ্চ গতিসম্পন্ন স্পিড বোট আনা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য গত ২৫ জুন একটি স্পিডবোট ইতিমধ্যেই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে গার্ডেনরিচে। জায়গার অভাবে বাকি দু’টি জলযান আপাতত রাখা হয়েছে হেমনগর উপকূলবর্তী থানা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে দুলদুলির সাহেবখালি নদীতে।
একেকটি জলযানে এক জন করে মাস্টার, ইঞ্জিন ড্রাইভার এবং অন্তত চার জন প্রশিক্ষিত কর্মী দরকার। সেখানে দু’টি জলযানের জন্য হেমনগরে আছেন এক জন মাত্র মাস্টার এবং ৪ জন পুলিশ কর্মী। দুলদুলিতে এই কর্মীদের থাকার কোনও ব্যবস্থা হয়নি। একটি জেটির উপরে তাঁবু খাটিয়ে কোনও মতে আছেন তাঁরা। এলাকায় গরু পাচারকারীদের রমরমা। জলদস্যুদের আনাগোনা আছে। এই পরিবেশে কোটি টাকা মূল্যের জলযান কী ভাবে সুরক্ষিত রাখবেন, তা ভেবে কিনারা করতে পারছেন না পুলিশ কর্মীরা। তাঁদেরই কেউ কেউ বলেন, “আমাদের যে ভাবে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকতে হয়, তাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকলেই আরও বিপদ। সীমান্ত এলাকায় যে কোনও সময়ে দুষ্কৃতীরা হামলা চালাতে পারে। আমরা কয়েক জন সামান্য গুলি-বন্দুক নিয়ে কিছুই মোকাবিলা করতে পারব না। অস্ত্রশস্ত্র সব দুষ্কৃতীরা কেড়ে নিতে পারে। তাই বোটে ব্যবহৃত গুলি-বন্দুক এবং আরও কিছু দামি সরঞ্জাম জমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের নিজেদের গুলি-বন্দুকও জমা দিয়েছি।”
বোটের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক প্রাণকৃষ্ণ সাউ বলেন, “তেলের অভাবে মাঝে মধ্যে ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়া ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। পরিকাঠামোর অভাব আছে। আমাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। অথচ, এত দামি দু’টি জলযানের ক্ষতি হলে তার দায় আমাদের উপরেই বর্তাবে। তাই একাধিকবার ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছি।” তা অবশ্য গৃহীত হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ কর্তারা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.