বহুজাতিক ধাঁচে এ বার আত্মমূল্যায়ন সিপিএমে
হুজাতিক সংস্থার ধাঁচে দলীয় কর্মীদের আত্মমূল্যায়নের (সেল্ফ অ্যাপ্রেইজাল) পরামর্শ দিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম।
সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা কমিটি থেকে শাখা কমিটির সদস্যদের একটি ডায়েরি দেওয়া হয়েছে। আগামী এক বছর নিজের পদমর্যাদা অনুযায়ী নিজে কতটা কাজ করেছেন, তা ওই ডায়েরিতে প্রতি মাসে লিপিবদ্ধ করতে হবে। লিখতে হবে
১) জনসংযোগ থেকে দলীয় নানা কর্মসূচি কোথায়, কখন, কী ভাবে করা হল।
২) সেখানে নিজের ভূমিকা ঠিক কী ছিল।
৩) দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি যা কাজ করেছেন, সে কাজে কি তিনি সন্তুষ্ট?
৪) কী করতে চেয়েছিলেন?
৫) কতটা পেরেছেন?
৬) কতটা সফল হয়েছেন?
৭) যদি সফল না হয়ে থাকেন, তার কী কারণ?
৮) বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণে সহযোগী নেতাদের কতটা সাহায্য পেয়েছেন।
৯) কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছিল কি না। যদি হয়ে থাকে তার কারণ।

সাধারণত বহুজাতিক বাণিজ্য সংস্থা প্রথম এই ধরনের আত্ম মূল্যায়নের ধারা চালু করেছিল। তারপর তা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন ‘কর্পোরেট হাউস’-এও। সিপিএমের মতো একটি রাজনৈতিক দলে এই প্রয়াস এই প্রথম বলেই দলের নেতাদের একাংশের দাবি। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “বহুজাতিক সংস্থার কর্মচারীদের জন্য এ ভাবেই আত্মমূল্যায়নের পদ্ধতি চালু আছে। তিন মাস অন্তর ওই আত্মমূল্যায়ন পর্যালোচনা করেন উচ্চপদস্থেরা। এ ক্ষেত্রে জনসংযোগ ও কার্যকারিতায় কোথায় গাফিলতি হচ্ছে তা সহজে ধরা পড়ে যায়।”
হুবহু সেই ধাঁচে ওই ডায়েরি তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তিন মাস অন্তর ডায়েরিতে দু’টি বিশেষ পাতা রাখা হয়েছে। ওই দু’টি পাতায় তিন মাস পর নিজের ভূমিকা পালনের বিষয়ে নিজের মতামত ব্যাখ্যা করে লিখতে হবে। ডায়েরি থেকে একটি পাতা ছিঁড়ে জেলা নেতৃত্বের কাছে পাঠাতে হবে। আরেকটি নিজের কাছে রেখে দিতে হবে। এ ভাবে প্রতিদিনের পাশাপাশি তিন মাস অন্তর নিজের মূল্যায়ন জেলা নেতৃত্বের কাছে পাঠাতে হবে।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই ডায়েরিতে নিজের মূল্যায়ন করবেন দলের সব স্তরের সদস্যেরা বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী। সিপিএম নেতাদের ব্যাখ্যা, “দলীয় কর্মীরা নিজেরাই মূল্যায়ন করলে ভাল-মন্দ দু’টিই পরিষ্কার হয়ে যাবে। কোথাও কোনও সাংগঠনিক জটিলতা দেখা দিলে নির্দিষ্ট ওই এলাকার সব স্তরের নেতাদের ওই ঘটনায় কী ভূমিকা ছিল তা সহজেই ধরা যাবে। ওই ডায়েরি পর্যালোচনা করে ঠিক কী ধরনের সমস্যা হয়েছিল, তা খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে। সেইমতো সমস্যা সমাধানের
ব্যবস্থাও করা যাবে বলে মনে করছে জেলা সিপিএম। ‘নড়বড়ে’ সংগঠনে এখন কোনও সমস্যার সূত্র খুঁজতে প্রায় খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন নেতারা। তাঁদের আশা, আত্ম মূল্যায়ন সংক্রান্ত ওই ডায়েরিই এ বার হদিস দেবে সমস্যার।
জেলা সিপিএম নেতাদের একাংশের ব্যাখ্যা, বহুজাতিক সংস্থাগুলি অল্প কর্মীর মাধ্যমে প্রতিযোগিতার বাজারে ব্যবসা করছে। সে ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভুল-ত্রুটি ধরতে না-পারলে সব ক্ষেত্রেই লোকসানের আশঙ্কা থাকে। কর্মীদের আত্মমূল্যায়নের মাধ্যমে উচ্চপদস্থেরা তুলনায় সহজে ত্রুটিগুলি চিহ্নিত করতে পারেন। তারপর সরাসরি উচ্চপদস্থেরা ওই নির্দিষ্ট কর্মীর সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেন। এ ক্ষেত্রেও তিন মাস অন্তর আত্ম মূল্যায়নের রিপোর্ট জেলা নেতৃত্ব পর্যালোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে পারবেন বলেই জেলার নেতাদের আশা। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদেরও ওই ডায়েরি দেওয়া হয়েছে বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে। এরপর ওই জেলার বিভিন্ন স্তরের দলীয় সদস্যদের ওই ডায়েরি দেওয়া হবে। সে জন্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার ডায়েরি ছাপা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.