শহরের যান সামলাতে ১০০ কর্মী নিচ্ছে পুরসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
শহরের যানজট রুখতে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ প্রশাসন ও বহরমপুর পুরসভার যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার থেকে পথে নামছে ১০০ জন কর্মী। মাথাপিছু ওই কর্মীদের প্রতি দিন ১০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। এ জন্য প্রতি মাসে তিন লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু বহরমপুরের যানজট থেকে সাধারণ নাগরিকদের রেহাই দিতে বাড়তি ওই অর্থ খরচ করতে রাজি হয়েছে পুর-কর্তৃপক্ষ।
শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয়-সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে বুধবার পুরপ্রধানের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জেলা পুলিশ সুপার। তাঁর এ দিনের ওই বৈঠকে পুরপ্রধান। এ দিনের বৈঠকে ওই কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা পুলিশ প্রশাসন ওই কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবে বলেও কথা হয়েছে। মাথাপিছু ওই কর্মীদের অবশ্য প্রতি দিন ১০০ টাকা করে ভাতা মিলবে। বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “কর্মীদের ওই ভাতা মেটাতে প্রতি মাসে পুরসভার বাড়তি তিন লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্য দিতে ওই বাড়তি অর্থ পুর-কর্তৃপক্ষ বহণ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুুন কবীর বলেন, “বহরমপুর শহরের যানজট একটা বড় সমস্যা। ওই যানজট রুখতে ১০০ জন কর্মীকে পথে নামানোর পাশাপাশি সংকীর্ণ রাস্তার দু-পাশে ইটের খোয়া ফেলে তা বাড়ানো হবে বলেও পুরপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।” এ জন্য আগামী শনিবার জেলা পুলিশ সুপার ও পুরপ্রধান একযোগে পুর-এলাকার বিভিন্ন যানজটপ্রবণ এলাকা সরজমিনে খতিয়ে দেখার পরেই ট্র্যাফিক ব্যবস্থার রূপরেখা তৈরি হবে বলেও আলোচনা হয়েছে।
এ দিকে নিয়ন্ত্রণহীন রিকশা’র দাপটে বহরমপুরের বিভিন্ন রাস্তায় মাত্রাতিরিক্ত যানজট হয়ে থাকে বলে পুরবাসিন্দাদের অভিযোগ। বহরমপুর লাগোয়া বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রতি দিন কয়েক হাজার রিকশা বহরমপুর শহরে ভিড় জমানোর ফলেই ওই যানজট চরম আকার নেয়। পঞ্চায়েত এলাকার ওই রিকশা’র পাশাপাশি শহরের পথে যে সমস্ত লাইসেন্সবিহীন রিকশা চলছে, তার বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ প্রশাসন ও পুরসভা যৌথ ভাবে নিয়মিত অভিযান চালাবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বহরমপুরের জনবহুল ও ব্যস্ততম উত্তরপাড়া মোড়, গির্জার মোড়, পঞ্চাননতলা, চুঁয়াপুর, রানিনবাগান, বিবেকানন্দ মূর্তির কাছে স্টেশন মোড়ে ‘সিগন্যাল অপারেটিং সিস্টেম’ চালু করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার মধ্যে গির্জার মোড়, রানিবাগান ও স্টেশন মোড়ে একমাত্র ওই সিগন্যাল পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু ওই পদ্ধতিতে গির্জার মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণ করা হলেও অচল হয়ে রয়েছে রানিবাগান মোড়ের সিগন্যাল পদ্ধতি। স্টেশন মোড়ের সিগন্যাল পদ্ধতিটি পরসভার নিয়ন্ত্রণাধীনে রয়েছে। তবে এদিনের আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা জেলা পুলিশ প্রশাসনকে হস্তানন্তর করে দেওয়া হবে। ডিএসপি (ট্র্যাফিক) আফসারউদ্দিন আহমেদ বলেন, “পঞ্চাননতলা, চুঁয়াপুর, রানিনবাগান মোড়ে অবিলম্বে ওই সিগন্যাল পদ্ধতি গড়ে তোলা হবে। আগামী দিন রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী সেতুর পশ্চিম পাড়ে উত্তরপাড়ায় ওই সিগন্যাল পদ্ধতি চালু করারও কথা হয়েছে।” এদিন শহরের সৌন্দর্যায়নের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, “শহরকে সুন্দর করে সাজাতে জেলা পুলিশের তরফে কোনও প্রস্তাব পাঠানো হলে তা অবিলম্বে কার্যকরী করার ব্যাপারেও পুরপ্রধান আশ্বাস দেন।” পুরপ্রধান বলেন, “রাস্তা দখল করে অস্থায়ী দোকান ঘর গড়ে তোলার ফলে অনেক সময়ে যান চলাচল থেকে পথচারীদের অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। ওই বেআইনি দোকান-ঘর উচ্ছেদের পরিকল্পনা করে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চাইলেও অনেক সময়ে পাইনি। শহরের যানজট কমাতে ও শহর সাজাতে পুলিশ সুপার আমাদের সমস্ত রকম সহায়তা করবেন বলে এদিন জানান। |