দূষণ নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে মালিকপক্ষ ও আদিবাসী গাঁওতার সদস্যদের মধ্যে মারামারিতে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল রামপুরহাট থানার বারমেশিয়া, দিঘলপাহাড়ি, ধরমপাহাড়ি, বড়পাহাড়ি পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকা। বৃহস্পতিবার এই ঝামেলা বাধে। এর জেরে এ দিন বিকেল পর্যন্ত রামপুরহাট থানার বড়পাহাড়ি মোড়ে, রামপুরহাট-দুমকা রোড়ে অবরোধ করেন গাঁওতার সদস্যরা। জখম অবস্থায় বিটন মাড্ডি নামে গাঁওতার এক সদস্যকে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রামপুরহাটের তিলডাঙা গ্রামের বাসিন্দা বিটন জানায়, গাঁওতা নেতা আরান্দার বাসিন্দা দেবু সোরেনের নির্দেশে ওই ছাত্র এবং পিয়ারশালা গ্রামের তিন জন বারমেশিয়া এলাকায় দু’টি ক্রাশারে দূষণের ব্যাপারে দেখতে যায়। তার অভিযোগ, “পরে মালিক পক্ষের লোকজন আমাকে মারতে শুরু করে। আমাকে মারছে দেখে বাকিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।” যে দু’টি ক্রাশারে তারা এ দিন গিয়েছিল, তার মধ্যে এক মালিক লুলু শেখ দাবি করেন, “ওরা আমাদের শ্রমিকদের এবং কর্মচারীদের মারধর করে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ না করলে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় শ্রমিক-কর্মচারীদের মারধর করতে থাকে। দূষণ নিয়ন্ত্রণের নামে টাকা দাবি করে অন্য একটি ক্রাশারে গিয়ে এক শ্রমিক-কর্মচারীরা বিটনকে আটকে রাখেন। বাকিরা পালিয়ে যায়। তাঁদের মধ্যে তাকে কেউ মারধর করে থাকতে পারে। মারধরের ঘটনায় মালিকপক্ষ জড়িত নয়।” |
বিটন মাড্ডির অবশ্য দাবি, “আমরা শুধু ধুলো রোধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। তাতেই মালিকপক্ষের লোকজন চড়, লাথি মারার পরে হেলমেট ও লাঠি দিয়ে মারতে থাকেন। আমরা কোনও টাকার দাবি করিনি।” গাঁওতা নেতা দেবু সোরেন বলেন, “আমরা প্রশাসনকে একাধিকবার ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তবুও দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে মালিকপক্ষ বা প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” তাঁর দাবি, “দূষণ কেমন হচ্ছে তা দেখার জন্য আমাদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের পাঠাই। পরিবর্তে এক সদস্যকে তারা মারধর করল। শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্যার সমাধান করতে চাই।” এর প্রতিবাদে বিকেল পর্যন্ত বড়পাহাড়ি মোড়ে অবরোধ করেন তাঁরা। পরে পুলিশের কাছে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। যদি পুলিশ ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে পাথরশিল্পাঞ্চলে বন্ধ ডাকা হবে বলে দেবু সোরেন জানিয়েছেন। জেলা আদিবাসী গাঁওতার সম্পাদক রবীন সোরেন বলেন, “ধুলো দূষণ বন্ধ করতে গিয়ে কেউ যদি মার খায়, তা হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।” ভারপ্রাপ্ত রামপুরহাট মহকুমাশাসক মহম্মদ ইব্রাহিম বলেন, “কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায় তা দেখছি। দুর্গাপুর থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্মীরা মাঝে মধ্যে আসছেন।” |