এক সময় জঙ্গলমহল এলাকায় গাছ কেটে পাচারের অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। জোরালো ভাবে এই অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই গাছ কেটে পাচারের অভিযোগ উঠছে!
ঘটনায় শোরগোল পড়েছে জেলা জুড়ে। কংগ্রেস এই অভিযোগ তোলায় জোটের মধ্যেই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কংগ্রেসের বক্তব্য, নয়াগ্রাম ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় গাছ কাটা চলছে। স্থানীয় কয়েক জন তৃণমূল কর্মীই এ কাজ করছেন। আর তাঁদের মদত দিচ্ছেন প্রশাসনের কিছু আধিকারিক ও কর্মী। |
বৃহস্পতিবার এই অভিযোগেই খড়্গপুরের ডিএফও মিলনকান্তি মণ্ডলের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। ডিএফও-কে এক স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। সেখানে অবশ্য তৃণমূলের নাম উল্লেখ করা হয়নি। বরং, ‘জঙ্গলদস্যুদের হাত থেকে জঙ্গল রক্ষা করা’র দাবি জানানো হয়েছে। তবে যুব কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের সভাপতি কৌশিক মহাপাত্র বলেন, “নয়াগ্রাম ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গল কেটে সাফ করা হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ কাজ করছেন তৃণমূলের কিছু কর্মী। জঙ্গল রক্ষা করার দাবিতেই আমরা ডিএফও-র দ্বারস্থ হয়েছিলাম।” এ দিন মুখে কালো কাপড় বেঁধে, হাতে প্ল্যার্কাড নিয়ে ডিএফও-র দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস ও যুব কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে। তাঁর কথায়, “যে করেই হোক জঙ্গলকে রক্ষা করতে হবে। এ ভাবে গাছ কেটে পাচার চলতে পারে না। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।”
কোন কোন এলাকায় গাছ কাটা হচ্ছে, ডিএফও-র কাছে তার একটি তালিকাও জমা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি অবৈধ কাঠকল রমরমিয়ে চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্যে পালাবদলের পর এই সব কাঠকলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এখন ফের তা চালু হয়েছে। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই অপপ্রচার করা হচ্ছে। নয়াগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক দুলাল মুর্মু বলেন, “এই এলাকায় গাছ কাটা হচ্ছে অথচ আমি তা জানি না, এটা হতে পারে না। কেউ আমার কাছে অভিযোগও করেননি।” তাঁর অভিযোগ, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন অপপ্রচার চলছে।” কোনও অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করারও আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক। একই আশ্বাস ডিএফও-রও। তিনি বলেন, “নয়াগ্রামে বেশ কয়েকটি অবৈধ কাঠকল চলছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিভিন্ন এলাকায় গাছ কাটা হচ্ছে বলেও অভিযোগ এসেছে। এই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” |