তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, উত্তেজনা দু’টি এলাকায়
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং তার জেরে অশান্তি অব্যাহত খানাকুলে। বুধবার রাতেও মাঝপুর গ্রাম এবং রামপ্রসাদ বাজারে পৃথক ভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে উত্তেজনা ছড়ায়।
মাঝপুর গ্রামে একটি কৃষি সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে চাষিদের ঋ
ণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর বিবাদ চলছিল বেশ কিছু দিন ধরে। সমিতিটি তৃণমূল পরিচালিত। বুধবার সন্ধ্যায় সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক তৃণমূলের সঞ্জয় সামন্তের পক্ষে থাকা কিছু চাষি বর্তমান সম্পাদক ওই দলেরই বিশ্বনাথ রায়ের কয়েক জন অনুগামীকে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। এ থেকেই গোলমাল বাধে। তিলকচক গ্রামে বিশ্বনাথবাবুর অনুগামীরা সঞ্জয়বাবুর পক্ষে থাকা হেমন্ত পাকিরা এবং বলরাম পাকিরাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। রাতে আবার হেমন্ত পাকিরা দলবল নিয়ে বিশ্বনাথবাবুর অনুগামী অভিজিৎ মাজি এবং সন্দীপ রায়ের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর এবং পরিবারের লোকজনকে মারধর করে বলে অভিযোগ।
অভিজিতের মা ঊর্মিলাদেবীর অভিযোগ, “তৃণমূলের ছেলেরাই শাবল দিয়ে গ্রিল ভেঙে বাড়িতে ঢুকে হামলা করে। থামাতে গেলে ওরা আমার চুলের মুঠি ধরে মারধর করে। জামাকাপড় ছিঁড়ে দেয়।” অভিজিৎ এবং সন্দীপের তরফে সঞ্জয় সামন্ত-সহ দলের ২৫ জনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সঞ্জয়বাবু। তিনি বলেন, “বিশ্বনাথবাবুর লোকজনের হাতে আমরাই প্রতিদিন হেনস্থা হচ্ছি। বুধবার রাতের ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই। মিথ্যা ভাবে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।” বিশ্বনাথবাবু এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই গণ্ডগোলের কিছু ক্ষণের মধ্যে মাঝপুরেরই ঘরছাড়া সিপিএম নেতা তথা দলের শাখা কমিটির সম্পাদক দেবকুমার পোড়েলের বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢুকে গয়না, বাসনপত্র এবং নগদ টাকা লুঠপাটের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ওই বাড়িতে দেবকুমারবাবুর স্ত্রী মিঠুদেবী ও তাঁদের দুই ছেলে থাকে। মিঠুদেবী বলেন, “তৃণমূলের ছেলেরাই বাড়িতে হামলা চালায়। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুঠপাট করে। থানায় জানালে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেয়।” দেবকুমারবাবু অবশ্য স্থানীয় তিন তৃণমূল সমর্থকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তৃণমূলের দাবি, অভিযোগ মিথ্যা।
অন্য দিকে, রামপ্রসাদ বাজারে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে আহত হন তিন জন। তাঁদের মধ্যে এক জনকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সিপিএম পরিচালিত ঘোষপুর পঞ্চায়েতে কিছু অনিয়মের অভিযোগ তোলে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কুরবান খানের অনুগামীরা। গত মঙ্গলবার তারা পঞ্চায়েত অফিসে তালা মেরে দেয়। তৃণমূলের আর একটি গোষ্ঠীর নেতা ইলিয়াস চৌধুরী তালা মারার প্রতিবাদ করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ওই সময় অবশ্য প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই পঞ্চায়েতের তালা খুলে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার সূত্রে ধরেই বুধবারের সংঘর্ষ বলে তৃণমূলেরই একটি অংশের দাবি। রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়।
ইলিয়াসের অভিযোগ, “বিধানসভা ভোটের পরে পঞ্চায়েতের থমকে যাওয়া কাজে গতি আনতে আমরা যখন সহযোগিতা করছি, তখন নানা কাল্পনিক ত্রুটি খুঁজে আমাদেরই একাংশ গতি থমকে দিতে চাইছে। বাধার সৃষ্টি করছে। এর প্রতিবাদ করায় ওরাই মারধর করে। আমরা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছি।” অভিযোগ অস্বীকার করে কুরবান খান বলেন, “আমরা গ্রামোন্নয়নের পাশাপাশি সব কাজে স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা দাবি করি বলেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আমাদের দলের একাংশ বাধা দিচ্ছে।” দু’পক্ষের তরফেই এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.