|
|
|
|
ত্রিপুরায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পর্ষদের |
আশিস বসু • আগরতলা |
লোকসানের পরিমাণ কমাতে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম শেষ পর্যন্ত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল। ২০১২-২০১৩ আর্থিক বছরের শুরু থেকেই হয়তো রাজ্যের গ্রাহকদের বর্ধিত হারে বিদ্যুৎ কিনতে হবে। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ রেগুলেটরি কমিশনের (সিইআরসি) কাছে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ প্রতি ইউনিটে ৪৮ শতাংশ বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাব করে ‘ট্যারিফ পিটিশন’ পাঠিয়েছে। রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের প্রধান নীলাদ্রি শেখর চক্রবর্তী বলেন, বিদ্যুতের মাসুল না বাড়িয়ে কোনও উপায় নেই। উল্লেখ্য, ৪৮ শতাংশ মাসুল বৃদ্ধি হলে ইউনিট প্রতি গড়ে এক টাকা থেকে আড়াই টাকা পর্যন্ত বাড়বে বলে নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে। এ পর্যন্ত প্রতি বছরই ত্রিপুরা সরকার রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমকে নিয়মিত ভর্তুকি দিয়েছে।
এ বছরও বিদ্যুৎ নিগমকে ৫১ কোটি টাকা ভর্তুকি বাবদ দেওয়ার কথা। কিন্তু ভর্তুকি না পেলেও যাতে নিগমের বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে না যায়, সে দিকে তাকিয়েই এই ৪৮ শতাংশ মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ দিকে, রাজ্যের ৫ লক্ষ ২০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহকের ৮০-৮৫ শতাংশই গৃহস্থ গ্রাহক। তাদের অধিকাংশেরই আর্থিক সঙ্গতি দুর্বল। রাজ্যের বাইরে থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের মূল্যবৃদ্ধি, নিগমের কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ পরিবহণ ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় বৃদ্ধিবিভিন্ন কারণে নিগমের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবং সরকারি ভর্তুকির উপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্যই বিদ্যুতের মাসুল না বাড়িয়ে উপায় নেই বলে নীলাদ্রিবাবু জানান। রেগুলেটরি কমিশনে রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম যে ‘ট্যারিফ পিটিশন’ জমা দিয়েছে, তাতেও সেটা স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে।
নিগম কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্তমান হারে বিদ্যুৎ মাসুল সংগ্রহ করা হলে আগামী ২০১২-২০১৩ আর্থিক বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ নিগমের ধারণা, সব ঠিকঠাক চললে এ বছরও রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম ত্রিপুরা সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি বাবদ ৫১ কোটি টাকা পাবে। সরকারি ভর্তুকি পেলে ইউনিট প্রতি মাসুল বৃদ্ধির হার ৪৮ শতাংশের পরিবর্তে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করলেই পরিস্থিতি সামলানো যাবে। নিগম সূত্রের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে মাসুল বৃদ্ধির পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। এতে গ্রাহকদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেওয়া যাবে। ‘ট্যারিফ পিটিশনে’র মাধ্যমে রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের দেওয়া তথ্য ও প্রস্তাব কতটা গ্রহণযোগ্য, তা সিইআরসি বিচার করে দেখবে। কমিশন রাজ্যের সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহক-সহ সরকারি-বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বক্তব্যও শুনবে। তার পর রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম মাসুল কতটা বাড়াতে পারবে, সে বিষয়ে সিইআরসি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। মার্চের মধ্যেই কমিশন সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে বলে আশা নিগম কর্তৃপক্ষের। সেই অনুযায়ী রাজ্যে মাসুলের হার বাড়বে। |
|
|
|
|
|