শ্যামবাজার মেট্রো
প্ল্যাটফর্ম ও কামরার ফাঁকে পা, জখম মহিলা
ফিস-টাইমে ভিড়ে ঠাসা মেট্রোয় উঠতে গিয়ে পা পিছলে গিয়েছিল মধ্যবয়সী মহিলার। ট্রেন আর প্ল্যাটফর্মের মাঝে ঢুকে যায় তাঁর ডান পা। থার্ড রেলের বিদ্যুতের ‘ছোঁয়ায়’ পুড়তে থাকে শাড়ি। আঁচে ঝলসে যায় তাঁর পা-ও। মহিলার চিৎকারে নেমে পড়েন যাত্রীদের অনেকেই। পরে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনে। পুলিশ জানায়, বছর চল্লিশের ওই মহিলার নাম মঙ্গলা গড়াই। বাড়ি ক্যানাল ওয়েস্ট রোডে। দমদমের একটি পোশাকের কারখানার কর্মী তিনি। এ দিন কর্মস্থলে যাওয়ার সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে। মেট্রো সূত্রে খবর, থার্ড রেলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ট্রেনের দুই মোটরম্যান তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর ডান পায়ে গুরুতর আঘাত লেগেছে। কিছুটা অংশ পুড়েও গিয়েছে। মেট্রোর তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, ওই মহিলা আপাতত সুস্থ আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টা ৬ মিনিটে দমদমমুখী ট্রেনটি তখন শ্যামবাজারে সবে ঢুকেছে। অফিস-টাইমে ওঠানামার জন্য চলছিল হুড়োহুড়ি। তার মধ্যে ট্রেনে উঠতে যান মঙ্গলাদেবীও। ধাক্কাধাক্কির মধ্যে হঠাৎ তাঁর ডান পা ট্রেন এবং প্ল্যাটফর্মের মধ্যের ফাঁকা জায়গায় ঢুকে যায়। পা আটকে যাওয়ায় টাল সামলাতে না-পেরে প্ল্যাটফর্মের উপরে উল্টে পড়েন ওই মহিলা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় তাঁর কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিলেন অন্য যাত্রীরাও।
জখম মঙ্গলাদেবী। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র
ওই সময়ে শ্যামবাজার মেট্রো ধরতে প্ল্যাটফর্মে নামছিলেন সঞ্জীব ভদ্র। তিনি বলেন, “সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই এক মহিলার ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ চিৎকার শুনতে পেলাম। ভিড় ঠেলে গিয়ে দেখি, চালকের কেবিনের ঠিক পরের কামরার সামনেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। ততক্ষণে মহিলার শাড়িও পুড়তে শুরু করেছিল। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতেই সাহায্য চাইছিলেন তিনি।” সঞ্জীববাবু বলেন, “মেট্রোর নিরাপত্তাকর্মীরা বলছিলেন, ওঁর (মঙ্গলাদেবী) কাছে যাবেন না, লাইনে বিদ্যুৎ রয়েছে। কিছুক্ষণ পরে ট্রেনের চালকেরা এসে ওই মহিলাকে উদ্ধার করেন।”
মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “এ ধরনের ঘটনা আগে মেট্রোয় ঘটেনি। যাত্রীরা একটু সতর্ক হলেই এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। ভিড়ের সময়ে তাড়াহুড়ো করে ট্রেনে না ওঠাই ভাল।” মেট্রো সূত্রের খবর, সকাল ৯টা ২১ মিনিটে কবি সুভাষ স্টেশন থেকে ওই ট্রেন নিয়ে দমদমের দিকে রওনা দিয়েছিলেন মেট্রোর দুই মোটরম্যান, রবিরঞ্জন ভকত এবং সুবীরকুমার ঘোষ। মেট্রো সূত্রে খবর, এক যাত্রী প্ল্যাটফর্মে পড়ে গিয়েছেন শুনেই ট্রেন থামিয়ে দেওয়া হয় বলে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তাঁরা। গিয়ে দেখেন, থার্ড লাইনের বিদ্যুতের স্পর্শে ওই মহিলার শাড়িও পুড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সঙ্গেসঙ্গেই কন্ট্রোল-রুমে ফোন করে থার্ড লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বলেন মোটরম্যানেরা। ট্রেনের কেবিনে থাকা বিদ্যুৎ-অপরিবাহী একটি দণ্ডের সাহায্য (ইমার্জেন্সি টেলিফোন কানেক্টর) নিয়ে ওই মহিলাকে টেনে বার করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই মহিলার ডান পায়ের চামড়া কিছুটা অংশ পুড়ে গিয়েছে। উদ্ধার করার পরেই জ্ঞান হারান মঙ্গলাদেবী।
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, থার্ড লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য প্রতিটি ট্রেনের নীচের দিকে দু’পাশে ‘থার্ড রেল কারেন্ট কানেক্টর’ (টিআরসিসি) নামে একটি বিদ্যুৎবাহী অংশ থাকে। ওই মহিলার শাড়ি সেটির সঙ্গেই লেগে গিয়েছিল। তাই তাতে আগুন ধরে যায়। তাপে পুড়ে যায় মহিলার পা-ও। মঙ্গলাদেবীর শরীরের কোনও অংশ সরাসরি ‘টিআরসিসি’-তে স্পর্শ করলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মেট্রোকর্তাদের একাংশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.