সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে গ্রাহক ভাঙানোর অভিযোগ তুলেছিল ইউনিনর। এ বার তাদের দাবি, আদালতের নির্দেশে যে সব সংস্থার টু-জি লাইসেন্স বাতিল হয়েছে এবং যারা ২০০৮-এর পর ব্যবসায় এসেছে, শুধু তাদের নিয়েই নতুন করে নিলাম হোক ১২২টি লাইসেন্স। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে হায়দরাবাদ ও কলকাতায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংস্থার এম ডি সিগভে ব্রেক্কে বলেন, “শুধু নতুন সংস্থাগুলিকেই নিলামে অংশ নিতে দেওয়া উচিত। ২০০৮-এর আগের পুরনো সংস্থাগুলিকে নয়।” টেলিকম শিল্পে প্রতিযোগিতা বাড়াতে ও নতুন লগ্নি টানতে এই সিদ্ধান্ত জরুরি বলে তাঁদের মত।
এ দিকে, ওই লাইসেন্স বাতিলের প্রভাব টেলিকম শিল্পে ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষত এই ধারণা তৈরি হওয়ার কারণ, ভারত থেকে প্রথম বিদেশি সংস্থা হিসেবে বাহরিন টেলিকমিউনিকেশন (বাটেলকো)-এর ব্যবসা গোটানোর সিদ্ধান্ত। সংবাদ সংস্থার খবর, ভারতীয় অংশীদার এস টেল-কে তাদের ৪৩% শেয়ার ১৭.৫ কোটি ডলারে বিক্রি করে দিয়েছে বাটেলকো। এস-টেল জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অস্বস্তিতে পড়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাটেলকো। একই পথে হাঁটার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়নি ইউনিনরে বিদেশি অংশীদার টেলিনরও। তা ছাড়া টেলিকম ক্ষেত্রে ভারতে করা লগ্নিকে ইতিমধ্যেই খরচের খাতায় (রাইট অফ) ধরে নিয়েছে আরও কয়েকটি সংস্থাও। যার মধ্যে অন্যতম সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর এটিসালাত।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে টেলিকম শিল্প কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত। যে সব সংস্থা ২০০৮-এর আগে থেকেই এই ব্যবসায় রয়েছে তাদের অধিকাংশই সমস্যায় পড়েনি। কিন্তু ২০০৮-এ লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংস্থাগুলির ১২২টি লাইসেন্স অনিয়মের অভিযোগে বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
ব্রেক্কের দাবি, এই পরিস্থিতিতে নতুন নিলামে পুরনোদেরও সুযোগ দিলে নয়া সংস্থাগুলিকে ব্যবসা গোটাতে হতে পারে। এবং তাতে এই শিল্পে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর যে লক্ষ্য সরকারের রয়েছে, তা ব্যর্থ হবে। তাই নতুনদের নিয়েই নিলাম করতে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের কাছে আর্জি জানাবেন তাঁরা। ব্রেক্কে বলেন, “দিল্লিতে কোনও নতুন সংস্থা পা পাখেনি। ফলে সেখানে গ্রাহকদের কলকাতা অথবা হায়দরাবাদের তুলনায় সিম কার্ড পেতে বাড়তি খরচ করতে হয়। মাসুলও দিতে হয় বেশি। প্রতিযোগিতা বাড়লে এটা হত না।” তবে একই সঙ্গে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা অমূলক বলেও তাঁর দাবি।
লাইসেন্স বাতিল হয়ে গিয়েছে বলে প্রচার চালিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা গ্রাহক ভাঙাচ্ছে বলে সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া-র (সিওএআই) কাছে অভিযোগ জানিয়েছে ইউনিনর। এ দিন সিওএআই-এর ডিরেক্টর জেনারেল রাজন ম্যাথুজও জানান, অন্য সংস্থার সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রচার না করতে তাঁরা সদস্য সংস্থাগুলিকে ই-মেল পাঠিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কর্মী, ডিস্ট্রিবিউটর, রিটেলার ও গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতে একগুচ্ছ প্রচারমূলক কর্মসূচি নিয়েছে ইউনিনর।
এ দিকে, সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে তাদের বিরুদ্ধে যে ফৌজদারি মামলা হয়েছে তাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এসার ও লুপ গোষ্ঠী। |