কবর খুঁড়ে ময়না তদন্তে পাঠানো হল শিশুর দেহাবশেষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নলহাটি |
আদালতের নির্দেশে তিন বছর পরে ৩ মাসের এক শিশুর দেহ কবর থেকে বের করা হল। বৃহস্পতিবার কবরের মাটি খুঁড়ে মৃত শিশুটির কতগুলি হাড় পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ তা রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠায়। যদিও রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে কঙ্কালের ময়না-তদন্ত করার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না থাকায়, আজ শুক্রবার তা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। রামপুরহাট আদালতের এসিজেএম আনন্দকুমার তিওয়ারির নির্দেশে বৃহস্পতিবার সকালে নলহাটি থানার মোস্তফাডাঙা পাড়া গ্রামে কবর খুঁড়ে হাড়গুলি বের করা হয়। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন নলহাটি ২ ব্লকের বিডিও গঙ্গাধর দাস, নলহাটি থানার ওসি মহম্মদ আলি-সহ একটি মেডিক্যাল টিম। |
তোলা হচ্ছে দেহাবশেষ। নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নলহাটি থানার মোস্তফাডাঙা পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সারজিনা বিবি ২০০৯ সালে ১৪ মে রামপুরহাট আদালতে স্বামী সফিকুল ইসলাম ও শাশুড়ি মোরসেদা বিবির বিরুদ্ধে তাঁর তিন মাসের শিশুকন্যা আসিদাকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। দীর্ঘদিন মামলা চলার পরে আদালত দু’দিন আগে মৃতদেহটি কবর থেকে তুলে এনে ময়না-তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত সফিকুল ইসলাম ও মোরসেদা বিবি দু’জনের বাড়ি মোস্তফাডাঙা পাড়ার বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন আগেই তাঁরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। অভিযোগকারী সারজিনা বিবি অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা বর্তমানে নলহাটি থানার হায়দারপুর গ্রামে বসবাস করছেন। সারজিনা বিবির আইনজীবী রিয়াজুল ইসলামের অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকেই সারজিনার উপরে স্বামী ও শাশুড়ি শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। একাধিকবার গ্রাম্য সালিশি সভায় মীমাংসা করে ঝগড়া বিবাদ মিটিয়ে সারজিনাকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানো হয়। ২৭ জানুয়ারি ২০০৯ সালে গভীর রাতে সারজিনার শাশুড়ি মোরসেদা বিবি তিন মাসের শিশুকন্যাকে কাপড় জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে। সারজিনার স্বামী সফিকুল ইসলাম তাকে খুন করতে সাহায্য করেন।”
শিশুকন্যার মা সারজিনার দাবি, “খুনের পরের দিন সকালে জোর করে আসিদার মৃতদেহ কবর দিয়ে দেয়।” এর পরেই পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সফিকুল ও তার মা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। সারজিনার আরও অভিযোগ, “আমি কালো বলে স্বামী ও শাশুড়ি আমার উপর অত্যাচার করত।” সারজিনার বাবা মজিবুল শেখের দাবি, “একমাত্র মেয়ের গ্রামেই বিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের পর থেকেই জামাই মেয়ের উপর অত্যাচার শুরু করে। গ্রামে একাধিক বার মীমাংসা হয়। আমি শিক্ষিত নই বলে প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে আদালতে জামাই ও মেয়ের শাশুড়ির নামে আমরা মামলা করি।”
|