রানওয়ে, যাত্রী টার্মিনাল, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে নির্দিষ্ট গতিতে। চলতি বছরের শেষেই অন্ডালের বিমানবন্দর থেকে বিমান ওঠা-নামা শুরু হয়ে যাবে। বিভিন্ন বিমান ও শিল্প সংস্থা নিয়ে ‘টাচ ডাউন অ্যাট দুর্গাপুর’ শীর্ষক আলোচনা চক্রের শেষে বিমানগরী নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বেঙ্গল এরোট্রোপলিসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত পাল এমনই আশা দিয়েছেন। বুধবার তিনি বলেন, “প্রকল্প এলাকায় জোরকদমে কাজ চলছে। নির্ধারিত সময় মতো এই বছরের শেষের দিকে উড়ান চালু হয়ে যাবে।”
অন্ডালে বিমাননগরীর পরিকল্পনার কথা প্রথম ঘোষণা হয়েছিল ২০০৭ সালে। কিন্তু সময়ে প্রয়োজনীয় জমি হাতে না পাওয়ায় প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত গত বছরের গোড়ার দিকে রানওয়ে এবং যাত্রী টার্মিনাল গড়ার কাজ শুরু হয়। বেঙ্গল এরোট্রোপলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রানওয়ের দৈর্ঘ্য ২,৮০০ মিটার। প্রয়োজনে তা ৩,৩১৫ মিটার পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। এয়ারবাস এ ৩২০-২০০, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ইত্যাদির মতো বড় বিমান ওঠা-নামা করতে পারবে। দুর্গাপুর, আসানসোল, ধানবাদ, বর্ধমান, শান্তিনিকেতন ঘিরে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ এই বিমানবন্দর ব্যবহার করবেন। প্রথম বছর প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ পর্যন্ত যাত্রী পাওয়া যাবে বলে সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে। পরে তা বেড়ে দাঁড়াতে পারে বছরে ১০ লক্ষ পর্যন্ত। সুব্রতবাবু বলেন, “ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই এখানে পরিকাঠামো গড়া হচ্ছে।”
বিভিন্ন বিমান ও শিল্প সংস্থার আধিকারিকেরা বুধবার আলোচনা চক্রে যোগ দেন। বিমানবন্দর নির্মাণে সহযোগী সংস্থা সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্ট ইন্টারন্যাশনালের আধিকারিক ইউ জিন জ্যানও ছিলেন। তাঁর মতে, কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ১৮০ কিমি দূরে এই বিমানবন্দরের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই এলাকায় প্রচুর সরকারি বৃহৎ শিল্প রয়েছে। বেসরকারি শিল্প সংস্থাগুলি লগ্নি করেছে। তা ছাড়া বহু বাণিজ্যিক সংস্থা, ভ্রমণ সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিমান ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে এই এলাকার মানুষের উপরে সমীক্ষা চালানো হয়। বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থার মতামতও নেওয়া হয়। সমীক্ষায় ইতিবাচক সাড়া মেলে।
ইউ জিন জ্যান বলেন, “অত্যন্ত আধুনিক ভাবে এই বিমানবন্দরটি গড়া হচ্ছে। আশা করি, যাত্রীরা এটি ব্যবহার করে সন্তুষ্ট হবেন।” ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আধিকারিক ডোনাল্ড মেনডিস বলেন, “নির্মাণকারীরা পরিকল্পনার যা খসড়া বললেন, তা বেশ আধুনিক মানের।” সুব্রতবাবু বলেন, “বিভিন্ন বিমান সংস্থার প্রতিনিধিদের সামনে আমাদের বিমানবন্দরের বিশেষত্ব ব্যাখ্যা করেছি। আমরা নিশ্চিত, একাধিক বিমান সংস্থা এই বিমানবন্দর থেকে উড়ান চালু করতে উদ্যোগী হবে।” |