নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
শহরের বাইরে দূরপাল্লা বাসের একটি আলাদা টার্মিনাস পেল ভিড়ে ঠাসা আসানসোল। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) স্ট্যাণ্ড ও ডিপো হিসেবে রূপান্তরিত হল নিবেদিতা বাস টার্মিনাস।
বৃহস্পতিবার এই টার্মিনাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সংস্থার চেয়ারম্যান তমোনাশ ঘোষ। কলকাতা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও উত্তরবঙ্গ যাওয়ার জন্য মোট ২৫টি বাস এখান থেকে ছাড়বে বলে এসবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে।
২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ছোট ও মাঝারি শহরগুলির জন্য সুসংহত প্রকল্প’ খাতে ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে টার্মিনাসটি তৈরি করেছিল আসানসোল পুরসভা। জায়গা দিয়েছিল আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। ওই বছরেই ১৯ এপ্রিল এডিডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী ওই টার্মিনাসের উদ্বোধন করেছিলেন। শহরের ভিতরে জায়গা কম থাকায় বাম পরিচালিত তৎকালীন পুরবোর্ড পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, দূরপাল্লার সব বাসই সিটি স্ট্যাণ্ডের পরিবর্তে ওই টার্মিনাসে থাকবে। অন্য দিকে মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, চিত্তরঞ্জন ও লালগঞ্জগামী সমস্ত বাস যেন নিবেদিতা বাসস্ট্যাণ্ড হয়ে সিটি বাসস্ট্যাণ্ডে ঢোকে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা কয়েক দিন পরেই বন্ধ হয়ে যায়। |
যাত্রা হল শুরু। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
আশির দশকের মাঝামাঝি সময়েও তৎকালীন বাম পরিচালিত পুরসভা দূরপাল্লার বাসগুলিকে সিটি স্ট্যাণ্ড থেকে সরানোর জন্য শহরের পূর্বে ঊষাগ্রাম ও পশ্চিমে কুমারপুরে একটি করে বাস টার্মিনাস করে। কিন্তু এক দিনের জন্যও কোনও দূরপাল্লার বাস সেখানে যায়নি। আসানসোল বাস অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তার দাবি, “পূর্ব-পশ্চিমে কেন ৩ কিলোমিটার করে অতিরিক্ত ৬ কিলোমিটার যেতে হবে, তা কর্মীদের কাছে পরিষ্কার ছিল না।” পরে ডিপো ও স্ট্যাণ্ড তৈরি করার জন্য ঊষাগ্রাম টার্মিনাসটি এসবিএসটিসি-কে দেওয়া হয়েছিল। কুমারপুর স্ট্যাণ্ডটিও পরে ভেঙে ট্রাকস্ট্যাণ্ড করে দেওয়া হয়। বংশগোপাল চৌধুরী অবশ্য বলেন, “আমাদের পরিচালিত পুরবোর্ড ভোটের আগেই ওই পরিকল্পনা নিয়েছিল। আমরা ঠিক করেছিলাম, দূরপাল্লার বাসগুলিকে ওই টার্মিনাসেই জায়গা দেওয়া হবে। এই পুর কর্তৃপক্ষ অনেক দেরিতে তা কার্যকর করল।”
আসানসোলের মেয়র তথা বর্তমান এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “টার্মিনাসটি পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছিল। এসবিএসটিসি-রও জায়গার দরকার ছিল। আমরা বিনা শর্তে ওদের পরিকাঠামো ব্যবহার করতে দিয়েছি। এতে যানজট সমস্যা কিছুটা মিটবে।” আইএনটিটিউসি অনুমোদিত আসানসোল সাবডিভিশন ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন এবং মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। আসানসোল বাস অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ নির্মল দাস বলেন, “নিয়ম না থাকা সত্ত্বেও কিছু বাস এখনও বাইপাস ছেড়ে শহরের ভিতরে ঢুকছে। কিন্তু সরকারি সদিচ্ছা থাকলে সবেরই সমাধান সম্ভব।”
মেয়র বলেন, “পুরনো জি টি রোডের দু’পাশে চারটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বাস রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকে। সেগুলির জন্যও স্কুলের পাশেই একটি বাস-বে করে দেওয়া হবে। বিএনআর সেতুর নীচে দাঁড়িয়ে থাকা ভলভো বাসগুলিকেও রবীন্দ্রভবনের সামনে দাঁড় করাতে হবে। এ নিয়ে সমীক্ষার কাজও শুরু হয়েছে।” |