|
|
|
|
আমরি-কাণ্ডে প্রণব-পৃথা-সাজিদ জেল হাজতে |
সুশান্ত ঘোষের ‘নজির’ তুলে জামিন প্রার্থনা |
সোমা মুখোপাধ্যায় • কলকাতা |
কঙ্কাল-কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্ট যদি সিপিএম নেতা তথা বিধায়ক সুশান্ত ঘোষকে জামিন দিতে পারে, তা হলে আমরি-কাণ্ডে অভিযুক্তেরা কেন জামিন পাবেন না, সোমবার আলিপুর আদালতে সে প্রশ্ন উঠল। তুললেন আমরি (ঢাকুরিয়া) হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট পৃথা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী।
আমরি’তে গত ৮ ডিসেম্বর রাতের অগ্নিকাণ্ড ও তার জেরে প্রাণহানির ঘটনায় ধৃত ওই হাসপাতালের তিন কর্তাব্যক্তি ভাইস প্রেসিডেন্ট পৃথাদেবী, নাইট-ইনচার্জ সাজিদ হোসেন ও পরিচালন বোর্ডের চিকিৎসক-সদস্য প্রণব দাশগুপ্তের জামিনের শুনানি এ দিন ছিল আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী হেফাজত করিমের এজলাসে। সেখানেই পৃথাদেবীর আইনজীবী অশোক মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, গড়বেতার কঙ্কালকাণ্ডের মতো গুরুতর ঘটনাতেও সুশান্তবাবুকে যদি সুপ্রিম কোর্ট জামিন দিয়ে থাকে, তা হলে তাঁর মক্কেলের কেন জামিন হবে না? আর প্রণববাবুর আইনজীবী তপেন রায়চৌধুরী জানতে চান, আমরি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর মণি ছেত্রী ‘অসুস্থতা’র কারণে জামিন পেলে ‘অসুস্থ’ প্রণববাবুও কেন পাবেন না? |
|
আর কত ছবি তুলবেন? চিত্র সাংবাদিকদের প্রশ্ন প্রণব দাশগুপ্তের। — নিজস্ব চিত্র |
সাজিদ হোসেনের আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায়ও তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন জানান। অন্য দিকে সরকারি আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। দু’তরফের সওয়াল-জবাবের পরে বিচারক তিন অভিযুক্তের জামিন নাকচ করে দিয়েছেন। তবে তিন জনকে এ দিন পুলিশি হেফাজত থেকে পাঠানো হয়েছে জেল হেফাজতে। আমরি-কাণ্ডে কলকাতা গোয়েন্দা-পুলিশ এ পর্যন্ত যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে, তাঁদের মধ্যে মণি ছেত্রী জামিন পেয়েছেন, আর অন্যতম ডিরেক্টর রাধেশ্যাম অগ্রবাল এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন। এ দিনের নির্দেশের পরে বাকি ১১ জনই জেল হেফাজতে গেলেন।
এবং এ দিন তিন অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আর্জিরও বিরোধিতা করেছিলেন তাঁদের কৌঁসুলিরা। অশোকবাবুর অভিযোগ ছিল, পৃথাদেবীর বিরুদ্ধে আইনি ধারাগুলো ঠিকঠাক প্রয়োগ করা হয়নি। “পূর্ণ মেয়াদের পুলিশি হেফাজতে জেরার যথেষ্ট সময় থাকা সত্ত্বেও ফের জেল হেফাজতে পাঠানোর আর্জি কেন?” প্রশ্ন করেন অশোকবাবু। তপেনবাবুর বক্তব্য ছিল, তদন্তকারীরা প্রণববাবুকে পুরো মেয়াদ পুলিশিহেফাজতে রাখার প্রয়োজন বোধ না-করার অর্থ, তাঁর মক্কেলের সঙ্গে আমরি-কাণ্ডের যোগসূত্র পুলিশ খুঁজে পায়নি। আর অমিতাভবাবুর দাবি, আমরি’র অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার দায়িত্ব সাজিদের ছিল না।
এই সব যুক্তি দেখিয়ে অভিযুক্তদের
জামিন চেয়েছিলেন তাঁদের কৌঁসুলিরা। সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য পাল্টা সওয়ালে দাবি করেন, আমরি’র বেসমেন্টের বদলে হাসপাতালের সামনে গাড়ি ‘পার্ক’ করতেন প্রণববাবু। এতে বোঝা যায়, বেসমেন্টে বেআইনি নির্মাণের কথা তাঁর অজানা ছিল না।
তা ছাড়া হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়ে থাকলে শহরের বিভিন্ন চেম্বার ও হাসপাতালে তিনি ‘ভিজিট’ও করতে পারতেন না বলে শক্তিবাবুর দাবি। তিনি বলেন, আমরি’তে বাজেয়াপ্ত কিছু নথিতে পৃথাদেবী ও সঞ্জীব পালের সই রয়েছে। সেগুলোর সঙ্গে দু’জনের হাতের লেখা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে মিলিয়ে দেখা জরুরি। তাই তাঁদের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হোক। পৃথাদেবী এবং সঞ্জীব পালের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহে আদালতের অনুমতিও এ দিন পেয়েছে পুলিশ। আদালত তিন অভিযুক্তকে ২০ ফেব্রুয়ারি ফের হাজির করাতে বলেছে। |
|
|
|
|
|