ন্যাকো ফিরিয়ে নিক, চায় রাজ্য
রক্ত সংগ্রহের বিশাল বাস ‘বোঝা’ হয়ে পড়ে আছে ডিপোয়
যেন ‘ভিক্ষা চাই না কুকুর সামলাও’ অবস্থা।
২০১০-এর ডিসেম্বরে ঘটা করে দিল্লি থেকে ন্যাশনাল এড্স কন্ট্রোল সোসাইটি (ন্যাকো) রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে পাঠিয়েছে পেল্লায় একটি বাস, যার পোশাকি নাম ‘মোবাইল ব্লাড বাস’। প্রায় ১ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা দামের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত এই বাসটির কাজ ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন রক্তদান শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করা। কিন্তু বিরাট বাসটির সংরক্ষণ এবং ব্যবহারের মতো পরিকাঠামোই নেই কলকাতায়। এই অবস্থায় রাজ্য স্বাস্থ্য-পরিবহণ বিভাগে কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে বাসটি। পরিবহণ বিভাগের ডিপোয় বিশাল জায়গা জুড়ে বসে রয়েছে, অথচ কোনও কাজেও লাগছে না। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ এড্স কন্ট্রোল সোসাইটির তরফে প্রায় আট মাস আগে ন্যাকোকে বাসটি ফেরত নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার কোনও উত্তরই আসেনি। অগত্যা বাসটি নিয়ে ‘গিলতেও পারছে না, ফেলতেও পারছে না’ অবস্থা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের।
অত্যাধুনিক ইউরো প্রযুক্তিতে তৈরি মোবাইল ব্লাড বাসটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রায় ১২ মিটার লম্বা এই বাসটিতে রক্তদাতাদের জন্য চারটি শয্যা ও পাঁচটি বসার আসন রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে, চিকিৎসক এবং অন্যরা মিলিয়ে প্রায় দশ জনের বসার জায়গা। এমনকী, পাশে ছাউনি তৈরি করে প্রয়োজনে অপেক্ষারত রক্তদাতাদের অতিরিক্ত বসার জায়গা বা ক্যাম্প করারও ব্যবস্থা রয়েছে বাসটিতে।
অব্যবহৃত এই ‘মোবাইল ব্লাড বাস’-এ রয়েছে এমনই নানা অত্যাধুনিক ব্যবস্থা। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য
এত কিছু থাকা সত্ত্বেও বাসটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না কেন? প্রায় আট মাস আগে পশ্চিমবঙ্গ এড্স কন্ট্রোল সোসাইটির তদানীন্তন প্রোজেক্ট ডিরেক্টর আর কে বৎস ন্যাকোকে বাসটি ফেরত নেওয়ার আর্জি জানিয়ে যে চিঠি লেখেন, তাতে বলা হয়েছে: “বাসটি বিরাট হওয়ায় কলকাতা-সহ জেলাগুলিতে সেটি নিয়ে ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।” এ ছাড়াও, জেসিপিএল সংস্থার তৈরি এই বাসটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও ‘ইউরো ফোর’ হওয়ার কারণে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও বিশেষ ধরনের জ্বালানি সংগ্রহেও অসুবিধা হচ্ছে। স্বাস্থ্য-পরিবহণ দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা পার্থসারথি পালের দাবি, “বাসটির মাধ্যমে রক্তদান শিবির করলে খরচ অত্যধিক হয়ে যাচ্ছে। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হচ্ছে সরকারের। এ ছাড়া, বাসটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বেশি।”
স্বাস্থ্য-পরিবহণ সূত্রে খবর, গত বছরের ৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে বাসটি শেষ বারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। তার পর থেকে বাসটি পড়ে রয়েছে ডিপোয়। কারণ, ‘ইউরো ফোর’ প্রযুক্তির বাসে যে বিশেষ ধরনের তরল ইউরিয়া লাগে, তা কলকাতায় অমিল। মুম্বই থেকে ওই বিশেষ ধরনের জ্বালানি আনার খরচও প্রচুর। এই অবস্থায় বাসটির রেজিস্ট্রেশনও এখনও করেনি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, “ঠিকমতো সমীক্ষা না করেই বাসটি কার্যত আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে ন্যাকো। এর থেকে বাসটির যা দাম, সেই টাকা আমাদের দিলে অনেক কাজে তা খরচ করা সম্ভব হত।
বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা পার্থবাবু বলেন, “ন্যাকো কোনও উত্তর না পাঠানোয় আমরা বাসটি ফেরত পাঠাতে পারছি না। এ দিকে, সেটি নিয়ে কী করব, তা-ও বুঝতে পারছি না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.