বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া এক বৃদ্ধাকে ঘরে ফেরাল প্রশাসন। বর্ধমানের কালনার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেনুবালা সাহা শনিবার দুপুরে বাড়ি ছেড়ে গিয়ে রানাঘাটের হবিবপুরে একটি পুজো মণ্ডপে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এলাকার কয়েক জন খবর দিলে প্রশাসনের আধিকারিকেরা তাঁকে বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হন। সোমবার বিকেলে তাঁকে কালনার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
হবিবপুরের বেলডাঙা গ্রামের বাসিন্দারা জানান, রবিবার সকালে তাঁরা বছর পঁচাশির ওই বৃদ্ধাকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বসে থাকতে দেখেন। এলাকাবাসীই তাঁকে পুজো মণ্ডপে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। সেখানেই রাত কাটান তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা নব ঘোষ বলেন, “বৃদ্ধার কথা শুনে মনে হচ্ছিল, রাগ করে বাড়ি থেকে চলে এসেছেন। তবে ফিরতে চান।” খবর পেয়ে গ্রামে যান রানাঘাট ১ বিডিও দিব্যেন্দুশেখর দাস ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তাপস ঘোষ। বিডিও বলেন, “ওই বৃদ্ধার কথা শুনে মনে হল, পারিবারিক অশান্তির জেরে বাড়ি ছেড়েছেন।” এ দিন বিকেলে বৃদ্ধাকে কালনায় পৌঁছে দেন রানাঘাট থানার এসআই অনুপ পাল ও হবিবপুরের পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল ঘোষ। |
বাড়িতে রেনুবালা সাহা। ছবি: কেদারনাথ ভট্টাচার্য। |
কালনায় ছেলে সুভাষ সাহার সঙ্গে থাকেন রেনুবালাদেবী। সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বৃদ্ধা বসে টিভি দেখছেন। তাঁর অভিযোগ, “আমাকে জুতো-কাপড় কিনে দেয় না বাড়ির লোকজন। নদিয়ায় মেয়ের বাড়িও যেতে দিচ্ছিল না। তাই পালিয়ে যাই। খেয়া পার হয়ে নৃসিংহপুর থেকে বাস ধরে রানাঘাট যাই। কিন্তু সেখানকার লোকজন আর আমাকে মেয়ের বাড়ি যেতে দেয়নি।” তাঁর পুত্রবধূ চন্দনাদেবী অবশ্য শাশুড়ির অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “ওঁর যথেষ্ট বয়স হয়েছে। একা একা মেয়ের বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয়। তবু শনিবার সকালে বারবার বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু দুপুরে সকলের নজর এড়িয়ে পালিয়ে যান।” রেনুবালাদেবীর মেয়ে, নবদ্বীপের বাসিন্দা পদ্ম সাহাও বলেন, “মা বার্ধক্যজনিত কারণে নানা রকম অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন।” চন্দনাদেবী জানান, তাঁরা রবিবার সারা দিন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নেন। সোমবার প্রশাসনের তরফে রানাঘাটে রেনুবালাদেবীর খোঁজ মিলেছে বলে জানানো হয়।
কালনার মহকুমাশাসক সুমিতা বাগচি জানান, ওই বৃদ্ধা নিয়মিত বার্ধক্য ভাতা পান কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। |