গাড়ির ধাক্কায় জখমদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়ার দাবিতে প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরোধ হল বাঁকুড়া থানার কাশীবেদিয়া চৌমাথা মোড়ে, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া ৬০-এ জাতীয় সড়ক। প্রথমে পুলিশ এসে অবরোধ তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্রের হস্তক্ষেপে সাড়ে ৪টের পরে অবরোধ উঠে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ বুদ্ধদেব মণ্ডল তাঁর স্ত্রী গীতাদেবী ও সাড়ে তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে মোটরবাইকে করে ইঁদপুরের চাকোলতোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। কাশীবেদিয়া চৌমাথা মোড় অতিক্রম করার সময়ে একটি গাড়ি তাঁদের বাইকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম অবস্থায় তিন জনকে স্থানীয় বাসিন্দারা পিকআপ ভ্যানে করে বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এর পরেই ক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দা বিধান মণ্ডল, অশোক মণ্ডলের দাবি, “ওই গাড়িটিতে কয়েক জন জওয়ান ছিলেন। আমরা ধাওয়া করে গাড়িটিকে ধরতে পারিনি। তাঁদের শাস্তি দিতে হবে। শুধু তাই নয়, ওই গাড়ির ধাক্কায় জখমদের চিকিৎসার খরচও দিতে হবে।” পাশাপাশি তাঁরা চৌমাথা মোড়ে ট্রাফিকের দাবিও জানিয়েছেন। |
দুপুরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে গিয়ে দেখা গেল, শিশুটির মাথায় ও বুদ্ধদেববাবুর পায়ে আঘাত লেগেছে। গীতাদেবী অল্পবিস্তর চোট পেয়েছেন গীতাদেবী বলেন, “আমরা রাস্তা অতিক্রম করার সময়ে দেখি, দ্রুত গতিতে একটি গাড়ি আসছে। তার পরেই আমরা রাস্তার এক ধারে দাঁড়িয়ে পড়ি। তার পরেও গাড়িটি আমাদের ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যায়। বাসিন্দারা উদ্ধার করে আমাদের হাসাপাতালে নিয়ে আসেন।” গীতাদেবীর বাবা পূর্ণচন্দ্র গড়াই বলেন, “জামাই কৃষি কাজ করেন। আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। এই রকম একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেল। অভিযুক্তদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ চাইছি।” কাশীনাথ মিশ্র বলেন, “বাসিন্দাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিটি ন্যায্য। তাঁরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান তার ব্যবস্থা করব। দোষীদের দ্রুত ধরার বিষয়ে পুলিশকেও জানাবো।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “এলাকাটি খুবই দুর্ঘটনাপ্রবণ। ওই চৌমাথার মোড়টিতে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা চালু করার কথা আমি আগেই পুলিশকে বলেছিলাম। কিন্তু এতদিনেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি বিষয়টি নিয়ে আবার পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।”পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই গাড়িতে জওয়ান ছিল কি না সেটাও দেখা হবে। তবে চৌমাথা মোড়ে ট্রাফিকের ব্যবস্থা নেই। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।
এ দিকে, ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তায় ৫ ঘণ্টা অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। রাস্তার দিকে বহু গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া যাচ্ছিলেন মিলন গড়াই, সৌমেন নাগ। তাঁরা বলেন, “হঠাৎ করে পথ অবরোধের জেরে আমাদের চরম সমস্যায় পড়তে হল।” পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়া যাচ্ছিলেন বাপি দাস। তিনি বলেন, “বাঁকুড়ায় মাসির বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলাম। ১২টার মধ্যে ঢোকার কথা ছিল। কিন্তু অবরোধ উঠতে উঠতে সাড়ে ৪টে পেরিয়ে গেল।” অবরোধে অন্য সব গাড়ি আটকে পড়লেও বিক্ষোভকারীরা অ্যাম্বুল্যান্সগুলি ছেড়ে দেন। |