যানজটের যন্ত্রণায় জর্জরিত করিমপুরকে রেহাই দিতে এগিয়ে এল করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি।
মঙ্গলবার সমিতির বৈঠকে এ ব্যাপারে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিধান দত্ত বলেন, ‘‘প্রায় প্রতি দিনই কলকাতা থেকে পণ্যবোঝাই লরি আসে করিমপুরে। নির্দিষ্ট দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পণ্য নামায় তারা। যানজটের সূত্রপাত এখান থেকেই। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এ বার আর দোকানের সামনে নয়, করিমপুর শহরের কাছে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সব দোকানের জিনিসপত্র নামানো হবে। সেখান থেকে দোকানে পৌঁছনো হবে মালপত্র। আগামী সপ্তাহ থেকেই এই ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে।’’ শহরে লরির ভিড় কমলে যানজটও যে কমবলে বলা বাহুল্য।
নিত্যযাত্রী থেকে স্কুল কলেজের পড়ুয়া— যানজটের শিকার সকলেই। সকাল দশটা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত করিমপুরের নতিডাঙা মোড় থেকে নাটনা পর্যন্ত রাজ্য সড়কের উপর যানবাহনের ভিড় লেগেই থাকে। তবে সব থেকে বেশি যানজট হয় করিমপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। করিমপুরে স্থায়ী কোন বাসস্ট্যান্ড না থাকার জন্য রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকে বাস। এ ছাড়াও সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, লছিমনের ভিড়ে রাস্তায় পা ফেলার জায়গাই থাকে না। তার উপরে পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলো দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে জিনিসপত্র নামানোর কারণে আরও বেশি যানজট হত স্থানীয় বাসিন্দাদের। অভিযোগ এই যানজটের বিষয়ে প্রশাসনকে বহুবার জানানো সত্ত্বেও সুরাহা হয়নি। এর ফলে সাধারণের সমস্যার পাশাপাশি ভুগতে হয় অ্যাম্বুল্যান্স ও দমকলের গাড়িকে।
করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিধান দত্ত বলেন, ‘‘যানজটের এই সমস্যা যাতে কিছুটা হলেও লাঘব করা যায় সেই কারণেই আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে ব্যবসায়ীদের খরচ কিছুটা হলেও বেড়ে গেল কারণ যেখানে পণ্য নামবে সেখান থেকে রিকশা বা অন্য ছোট গাড়িতে দোকানে মাল নিয়ে যেতে গেলে যে ভাড়াটা লাগবে সেটা বহন করতে হবে সেই ব্যবসায়ীকেই। তা ছাড়া যে মজুরেরা ট্রাক থেকে জিনিসপত্র নামিয়ে দোকানে পৌঁছে দিতেন তাদের পরিশ্রমও বেড়ে গেল। তাই তাদের মজুরিও বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের খরচ আগের তুলনায় একটু বেড়ে গেলেও আমরা সাধারণের স্বার্থেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয় করিমপুরে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকার ফলেই এমন যানজট তৈরি হয়। বিপণন দফতরের কাছে বাসস্ট্যান্ড তৈরির জায়গা চেয়ে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’ |