রেলমন্ত্রী থাকার সময়েই উত্তরবঙ্গের সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত রেললাইন তৈরির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সেই পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে সবুজ সঙ্কেত দিল রাজ্যের বন দফতর। সোমবার সল্টলেকে অরণ্য ভবনে ‘স্টেট ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ড’ বা রাজ্য বন্যপ্রাণ পর্ষদের প্রথম বোর্ড মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মহানন্দা নদীর পাড় বরাবর ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রেললাইন তৈরি হবে। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত ওই রেললাইনের একটি অংশ নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হবে সুড়ঙ্গ। তবে তার জন্য খুব বেশি সবুজ ধ্বংস হবে না বলেই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। এ দিন তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সিকিমের যোগাযোগ বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” রংপো থেকে ওই রেললাইনের সিকিমে যাওয়ার কথা। সিকিমের মধ্যে রেললাইনের অংশটুকু তৈরি করবে সেখানকার সরকার।
মহানন্দার পাড় দিয়ে বর্তমানে ন্যারো গেজ রেললাইন রয়েছে। সেটিই ব্রডগেজ করে সেবক পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। এখনকার রেললাইনটি হাতিদের যাতায়াতের পথের উপর দিয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ওই পথে ট্রেনের ধাক্কায় বহু হাতি মারা গিয়েছে। এই অবস্থায় নতুন রেললাইন বন্যপ্রাণীদের পক্ষে কতটা হানিকর হতে পারে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। তবে বনমন্ত্রী জানান, মহানন্দা অভয়ারণ্যের একেবারে সীমানা বরাবর ওই রেললাইন নিয়ে যাওয়া হবে বলে সমীক্ষার পরে জানিয়েছে রেল। তাই সেখানে বন্যপ্রাণীদের জীবনহানির আশঙ্কা কম বলেই মনে করেন মন্ত্রী।
শুধু লাইন নয়, সেবক থেকে রানিপুল পর্যন্ত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কটিকেও পর্যটনের স্বার্থে আট থেকে ১২ মিটার চওড়া করা হবে বলেও জানান বনমন্ত্রী। হিতেনবাবু জানান, দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবনে নতুন ও সর্ববৃহৎ অভয়ারণ্য তৈরির প্রস্তাবটিও রাজ্যের ছাড়পত্র পেয়েছে। সেখানকার চুলকাটি ও দুলিভাসানি ব্লক দু’টিতে ওই অভয়ারণ্য হবে। ৩৬২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে অভয়ারণ্য হবে বলে বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এখন ওই অঞ্চলের লুথিয়ানে ৩৮ বর্গ কিলোমিটার এবং হ্যালিডেতে ছয় বর্গ কিলোমিটারের দু’টি অভয়ারণ্য রয়েছে। |