জলপাইগুড়ি শহরের জঞ্জাল অপসারণের সমস্যা অবশেষে কাটতে চলেছে। আজ, মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি পুরসভাকে বিকল্প ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জমি হস্তান্তর করবে জেলা প্রশাসন। শহর লাগোয়া মন্ডলঘাট এলাকায় প্রায় চার একর জমি পুরসভাকে ডাম্পিঙ গ্রাউন্ড তৈরির জন্য প্রশাসনের তরফে তুলে দেওয়া হবে। আজ দুপুর একটার সময় পুরসভা কর্তৃপক্ষের নামে জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া করা হবে। প্রশাসন সুত্রে জানা গিয়েছে, মন্ডলঘাট এলাকায় যেখানে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জন্য জমি দেওয়া হবে সেই এলাকাতেই হস্তান্তর প্রক্রিয়া হবে। প্রশাসনের তরফে সোমবার বিকেলে পুরসভাকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। বিকল্প ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জমি পেলেও সেই জমি ব্যবহারের উপযোগী করতে বেশ কিছুটা লাগবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। প্রথমে সীমানা প্রাচীর দিয়ে জমি ঘিরে তার ভেতরে গর্ত খুড়ে পিট তৈরির কাজ করা হবে। জৈব ও অজৈব বর্জ্য পৃথক ভাবে রাখার ব্যবস্থা যেমন করা হবে তেমনিই হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের মেডিক্যাল বর্জ্য রাখার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের আশেপাশে এলাকায় যাতে দূষণ না ছড়ায় তার জন্য গাছ লাগানো সহ বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বলে পুরসভা জানিয়েছে। সব কিছু করতে ন্যূনতম মাসখানেক সময় লাগবে বলে প্রশাসনকে জানিয়েছে পুরসভা। এই সময়ে জলপাইগুড়ি শহর থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য কোথায় ফেলা হবে সে বিষয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য মন্ডলঘাট এলাকার জমি পুরসভাকে হস্তান্তর করা হবে। মঙ্গলবার দুপুরে এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া হবে। পুর কর্তৃপক্ষকে সইসাবুদের জন্য মন্ডলঘাটের জমিতেই উপস্থিত থাকতে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে পুরসভা সন্তুষ্ট। আশা করছি দ্রুত শহরের জঞ্জাল চিত্র স্বাভাবিক হবে।” শহরের অদূরে পাঙ্গায় পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে গত ৫ দিন ধরে জঞ্জাল ফেলতে পারছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড থাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে দীর্ঘদিন ধরেই পাঙ্গার একাংশ বাসিন্দারা পুরসভাকে ময়লা ফেলতে বাধা দিয়ে আসছেন। গত দু বছরে নানান সময়ে পুরসভা ও প্রশাসন এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠক করায় সাময়িক ভাবে সমস্যা মিটলেও ডাম্পিং গ্রাউন্ড অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার দাবি থেকে বাসিন্দারা একচুলও সরেননি। চলতি বছরের প্রথম থেকেই ফের পাঙ্গায় ময়লা ফেলতে বাধা দিতে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা। ডাম্পিং গ্রান্ডে ময়লা ফেলতে না পেরে শহরের বিভিন্ন মোড়ের ভ্যাটেই ময়লা জমিয়ে রাখে পুরসভা। শহরে দূষণ ছড়াতে শুরু করে। বর্জ্য না সরানোয় দূষণ ছড়াতে থাকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালেও। পুরসভাও পাঙ্গার চারজন আন্দোলনকারী চার নেতার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়। এর পরেই দুপক্ষের সংঘাত চরমে পৌঁছয়। এই পরিস্থিতি চলাকালীনই বিকল্প ডম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির জমি পুরসভাকে হস্তান্তর করে দেওয়ার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে সমাধানের রাস্তা বের হয়েছে। |