মাঝে বইছে দ্বারকেশ্বর। এ-পারে বিষ্ণুপুর, জয়পুর। ও-পারে পাত্রসায়র, সোনামুখীর জঙ্গল। এ-পারে ২৫। ও-পারে শ’খানেক।
‘হাতাহাতি’ বাধল বলে! এতগুলো হাতির ‘হাতাহাতি’ ঠেকাতে তাই কার্যত রাতের ঘুম উড়েছে বাঁকুড়া জেলার বন দফতরের। যে কোনও ভাবে ওই ২৫টি হাতিকে নদীর এ পারেই আটকে রাখতে মরিয়া বনকর্মীরা। বড় পালটিকে খেদানোর চেষ্টাও যে চলছে না, তা নয়। তবে জেলার বনকর্তারা বলছেন, “শ’খানেক হাতির চেয়ে ২৫টার সঙ্গে যোঝা ঢের সহজ!” |
বাঁকুড়ার পাত্রসায়র রেঞ্জে দলমা থেকে আসা হাতির দল। সোমবার ছবিটি তুলেছেন শুভ্র মিত্র। |
পাশের জেলা পুরুলিয়া থেকে ঢুকেছে ৫০টি হাতি। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের অর্ধেক অংশের অবস্থান বিষ্ণুপুরের লটিহাড় গ্রামের কাছে দ্বারকেশ্বর নদের পাড়ে। অন্য ২৫টি সরে গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দিকে। অন্য দিকে, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে দলমা থেকে ঢোকা শ’খানেক হাতির পাল রয়েছে দ্বারকেশ্বরের ও-পারে পাত্রসায়র রেঞ্জের জঙ্গলে। এই ১৫০টি হাতি গত তিন-চার মাস ধরে গোটা জেলা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বড়জোড়া, বেলিয়াতোড়, বিষ্ণুপুর, সোনামুখী, পাত্রসায়রের বিস্তীর্ণ এলাকায় তছনছ করেছে বিঘের পরে বিঘে ধান, আলু আর সব্জি। দাঁতালের হানায় প্রাণও গিয়েছে একাধিক গ্রামবাসীর। ক্ষোভে ফুঁসছেন জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের মানুষ। এই অবস্থায় দু’দল হাতি মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ অনিবার্য। তাতে আরও বিপদে পড়বেন গ্রামবাসীরা। ডিএফও (বিষ্ণুপুর বন বিভাগ) বিদ্যুৎ সরকার বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি, ২৫টি হাতির দলকে বিষ্ণুপুর শহরের কাছে বাসুদেবপুর জঙ্গলে খেদিয়ে নিয়ে যেতে।” নদীর ও-পারের ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগ) এস কুলন ডেইভালেরও আশঙ্কা, “সংঘর্ষ এড়াতে বড় দলটিকে কিছুটা পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।” এত করেও রবিবার রাতেই দুই দলের মুখোমুখি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বড় দলটি দ্বারকেশ্বর পেরিয়ে ফের বিষ্ণুপুর বনাঞ্চলের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। মশাল নিয়ে গ্রামবাসীরা প্রবল হইচই জুড়ে দেওয়ায় খানিক বিরক্ত হয়েই ওই দলটি পাত্রসায়রের দিকে সরে যায়। |