স্ত্রী প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে অমেঠি-রায়বরেলীতে প্রচারে আগেও গিয়েছেন তিনি। কিন্তু এ বার রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে মুখ খুলে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন সনিয়া গাঁধীর জামাতা রবার্ট বঢরা।
রায়বরেলীতে আজ কংগ্রেসের হয়ে মোটরসাইকেল মিছিলে যোগ দেন রবার্ট। তাঁকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। প্রশ্ন ওঠে, প্রিয়ঙ্কা সক্রিয় রাজনীতিতে কবে অংশ নেবেন? রবার্ট বলেন, “এখন রাহুলের সময় চলছে। পরে প্রিয়ঙ্কার সময় আসবে। ঠিক সময়ে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেবেন। গাঁধী পরিবার অমেঠি-রায়বরেলী তথা উত্তরপ্রদেশের জন্য চিরকাল কাজ করবে।” প্রশ্ন ওঠে, তিনি কবে রাজনীতিতে অংশ নেবেন? রবার্ট বলেন, “এমন একটা পরিবারে বিয়ে করেছি, যেখানে রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা সম্ভব নয়। মানুষ চাইলে রাজনীতিতে আসব। তা ছাড়া আমি যখন মনে করব, রাজনীতিতে যোগ দিলে মানুষের জন্য ভাল কিছু করতে পারব, তখনই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখব। তবে এই মুহূর্তে রাহুলের জন্য প্রচার করছি। আপাতত এতেই খুশি।”
রবার্টের এই মন্তব্যেই অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। তা ছাড়া, তাঁর মোটরসাইকেল র্যালি নিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রশ্ন তোলায় অস্বস্তি বেড়েছে দলের। রবার্টের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেসের তরফে কেউ মন্তব্য করতেও রাজি হয়নি। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ বিরোধীদের রয়েছেই। প্রিয়ঙ্কা ও নিজের ভবিষ্যৎ রাজনীতি সম্পর্কে রবার্ট আজ যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাতে বিরোধীদের পক্ষে সেই অভিযোগ তোলা আরও সহজ হয়ে গেল। উত্তরপ্রদেশ ভোটে অনিবার্য ভাবেই মায়াবতী বা বিজেপি কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব হবে। |
অমেঠিতে কংগ্রেসের মিছিলে রবার্ট বঢরা। ছবি: পি টি আই |
বিজেপি অবশ্য এখনও পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেনি। দলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, রবার্টের মন্তব্যের কী প্রতিক্রিয়া হয়, তা বুঝে নিতে চাইছে বিজেপি। তার পর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলবে তারা। আজ বিজেপি মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “এটা গাঁধী পরিবারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ওঁরা কে কবে রাজনীতিতে আসবেন, ওঁদের ব্যাপার। এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।”
রাজীব-সনিয়া গাঁধীর কন্যা হিসেবে প্রিয়ঙ্কার সক্রিয় রাজনীতিতে আসার বিষয়টি নিয়ে জল্পনা ও আগ্রহ অবশ্য নতুন নয়। কংগ্রেস নেতাদের অনেকেই মনে করেন, প্রিয়ঙ্কা রাজনীতিতে এলে চমক দেখাতে পারেন। তবে কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “প্রিয়ঙ্কা তো সক্রিয় রাজনীতিতেই রয়েছেন। তিনি যে ভাবে অমেঠি-রায়বরেলীতে প্রচার করছেন, তা সক্রিয় রাজনীতি ছাড়া আর কি! তা ছাড়া প্রিয়ঙ্কার ক্যারিশ্মা রয়েছে ঠিকই। অনেকেই তাঁর মধ্যে ইন্দিরা গাঁধীর ছায়া দেখতে পান। কিন্তু রাহুলও অনেক বেশি পরিণত। রাজ্যে কংগ্রেসকে লড়াইয়ের জায়গায় এনে দেওয়ার কৃতিত্বও রাহুলেরই।” আজ রাহুলের সাংবাদিক বৈঠকেও প্রিয়ঙ্কার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তিনি বলেন, “এ নিয়ে প্রিয়ঙ্কা সিদ্ধান্ত নেবেন।”
কাল রায়বরেলীতে প্রিয়ঙ্কাকে বলা হয় যে, বিরোধীরা তাঁকে ‘বর্ষাকালের ব্যাঙ’ বলছেন! ভোট এলেই তাঁকে দেখা যায়। জবাবে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘ঠিকই বলছেন ওঁরা। ভোটের সময়েই তো আমি আসি’। আজ রাহুলকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “প্রিয়ঙ্কা বর্ষাকালের ব্যাঙ হলে, আমিও তাই। কারণ আমি তো ওঁর দাদা!” |