কর্মী সমস্যায় ধুঁকছে ডিপো
বাসের টায়ার, স্প্রিং মেরামতি থেকে ওয়েল্ডিং, গাড়ি ধোওয়া থেকে ডকিং, কার্পেন্টিং, বাস পাহারা দেওয়ার মত যাবতীয় কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্টীয় পরিবহনের বালুরঘাট ডিপোয়। গুরুত্বপূর্ণ ওই পাঁচটি বিভাগের কাজ চালানো হত ঠিকা কর্মীদের দিয়ে। কেননা গত ২০-২৫ বছর ধরে ওই বিভাগগুলিতে কোনও স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করেননি নিগমের কর্তারা। রাতারাতি ঠিকা কর্মী ছাঁটাইয়ের জেরে ওই বিভাগগুলির কাজকর্ম ব্যাহত হয়ে পড়ায় অশনি সঙ্কেত দেখছেন বালুরঘাট ডিপো কর্তৃপক্ষ। ডিপো ইনচার্জ অচিন্ত্য লাহা এই পরিস্থিতির কথা অস্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “স্থায়ী কর্মী নেই। বিভাগগুলি ওই অস্থায়ী কর্মীদের দিয়েই চলত। এখন বাস খারাপ হয়ে বসে গেলে কী করে তা ঠিক করে তোলা হবে এই চিন্তায় ঘুম ছুটেছে ডিপো কর্তৃপক্ষের।” নিগমের দৈন্যদশা রোধে এই পরিস্থিতিতে সংস্থার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ টিঁকে থাকার দাওয়াই জানতে কী করণীয় সেই ব্যাপারে শনিবার কোচবিহারে বৈঠকে কর্মী সংগঠনের কাছে পরামর্শ চান। এ দিন বালুরঘাটের সবকটি কর্মী ইউনিয়নের তরফে দাবি উঠেছে ‘ডিপো ভিত্তিক সমীক্ষার’। ইনটাকের ডিপো সভাপতি অরুণ সরকার, সিটুর কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক শিশির দে কিংবা তৃণমূল কর্মী সংগঠনের ডিপো সভাপতি সুনীল কর্মকারের বক্তব্য একটাই, ঘরে বসে সিদ্ধান্ত না নিয়ে কর্তৃপক্ষ ডিপোর বাস্তব অবস্থা সমীক্ষা করে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিন।
বালুরঘাট ডিপোয় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
সিটু নেতা শিশিরবাবুর অভিযোগ, “বহু বার কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। তাঁরা কর্ণপাত না-করে উল্টে বলেছেন যারা স্থায়ী কর্মী আছেন, তাদের ২৪ ঘন্টা কাজ করতে হবে। এটা কী সম্ভব?” এ দিকে, কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে রবিবারেও বালুরঘাটে আন্দোলন ছিল অব্যাহত। পুনর্বহালের দাবিতে বালুরঘাটে উত্তরবঙ্গ রাষ্টীয় পরিবহনের ছাঁটাই ঠিকা কর্মীদের লাগাতার ২৪ ঘন্টা ব্যাপী অবস্থান আন্দোলন এ দিন চারদিনে পড়ল। সংস্থার বালুরঘাট ডিপোর সামনে ধর্না মঞ্চে কাজ হারানো ২৯ জন ঠিকা শ্রমিক দিনরাত অবস্থান কর্মসূচি থেকে অনশন আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। এদিকে, ওই ঠিকা কর্মীদের বসিয়ে দেওয়ায় বালুরঘাট ডিপোর বাস রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ব্যাহত হয়ে পড়ায় স্থায়ী কর্মীদের মধ্যেও চাকরি হারানোর আতঙ্ক গ্রাস করেছে। তাঁদের অভিযোগ সংস্থার কর্তৃপক্ষের ওই ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে বালুরঘাট ডিপোর ঝাঁপ অচিরেই বন্ধ হয়ে পড়বে। বর্তমানে বালুরঘাট ডিপোর স্থায়ী কর্মী সংখ্যা ১৫৭ জন (সামনের মাসে অবসর নেবেন ৪ জন)। কর্মরত কর্মীর মৃত্যুতে পরিবারের ১৫ জনকে এই ডিপোয় মাসে ৩,৪৯০ টাকা বেতনের চুক্তিতে কাজ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩৭ জন ঠিকাদার নিযুক্ত কর্মীর মধ্যে ডিপোর টায়ার, ওয়েল্ডিং-সহ ৫টি বিভাগে কাজ করছিলেন ২১ জন এবং নিরাপত্তার কাজে ছিলেন ১৬ জন। এর মধ্যে ডিপোয় কর্মরত ২১ জনের মধ্যে ৫ জনকে রেখে ১৬ জন ও নিরাপত্তার কাজে ৩ জনকে রেখে বাকি ১৩ জন-সহ মোট ২৯ জনকে ছাঁটাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই ৩৭ জনের মধ্যে কোন ৮ জনকে রেখে বাকি ২৯ জনকে ছাঁটাই করবেন, এই অস্বস্তিকর অবস্থায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার চুক্তি বাতিল করে দিয়েছেন। বালুরঘাট ডিপোয় বাসের সংখ্যা ৩৬। বাস পিছু বর্তমানে কর্মী রয়েছেন গড়ে ৫ থেকে ৬ জন। কর্মীদের অভিযোগ, গত ৬ মাস ধরে টায়ার, যন্ত্রাংশের সরবরাহ নেই। ডিসেম্বর ও জানুযয়ারি মাসের বেতন নেই। লাভজনক ট্যুরিস্ট বাস সার্ভিস তুলে দেওয়া হয়েছে। রিজার্ভ বাসের ক্ষেত্রে কিলোমিটার পিছু ভাড়া একধাপে ২২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করায় জনসাধারণ আর বাস ভাড়া নিচ্ছেন না। এত কিছুর পরেও বালুরঘাট ডিপো থেকে রোজ সংগ্রহের পরিমাণ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.