সরকারি টাকা বিলির ক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগ তুলল শিলিগুড়ি মহকুমার গ্রামের নানা এলাকার ক্লাব। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্লাবগুলিকে ২ লক্ষ টাকা করে দেন। ওই তালিকায় শিলিগুড়ি শহরের ৬টি ক্লাব রয়েছে। গ্রামাঞ্চলের ক্লাবগুলির অভিযোগ, ধারাবাহিকতার বিচারে শহরের ক্লাবগুলির চেয়ে তাঁরা কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই। তার পরেও আর্থিক সাহায্য দেওয়া তো দূরের কথা, আবেদন জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়নি। কী ভাবে, কোথায় আবেদন জানাতে হবে সেই ব্যাপারে কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি তাঁদের। প্রসঙ্গত, মহকুমার গ্রামাঞ্চলে দুটি বিধানসভা ক্ষেত্র, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া কংগ্রেসের দখলে। সেই কারণেই উঠেছে দলতন্ত্রের অভিযোগও। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এই ব্যাপারে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে গ্রামাঞ্চলের ক্লাবগুলি। মাটিগাড়া ব্লকের শিবমন্দিরের সরোজিনী সঙ্ঘের সম্পাদক দীপ্তেন্দু ঘোষ বলেন, “আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে কেন বঞ্চনা করা হল তার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলাম ক্লাবগুলিকে আর্থিক সাহায্য করা হবে। কিন্তু কী ভাবে, কোথায় আবেদন জানাতে হবে তার কিছুই জানানো হয়নি। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ আমাদের কখনওই কিছু জানায়নি। বিষয়টি ক্রীড়ামন্ত্রীকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হবে।” শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সম্পাদক নান্টু পাল অবশ্য এই ঘটনায় দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে রাজ্য সরকার কোনও আবেদন নেয়নি। আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছে স্থানীয় বিধায়কদের মাধ্যমে। সুতরাং আমাদের কিছু করার নেই। তবে গ্রামাঞ্চলের ক্লাবগুলি সাহায্য পাক সেটা আমরাও চাই।” এই ব্যাপারে মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকার বলেন, “ক্লাবগুলিকে যে রাজ্য সরকার সাহায্য দেবে সে কথা সংবাদ মাধ্যমের দৌলতেই আমি জানতে পারি। সরকারি ভাবে আমায় কিছুই জানানো হয়নি। তবে সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্লাবগুলি যাতে আবেদনপত্র জমা দিতে পারে সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছি। তার পরে রাজ্য সরকার কী করবে সেটা তাঁদের বিষয়।” গ্রামাঞ্চলের ক্লাবগুলির সঙ্গে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি শিলিগুড়ি মহকুমার প্রায় ৪০টি ক্লাব একজোট হয়ে পৃথক ক্রীড়া পরিষদ গঠনে উদ্যোগী হয়েছে, যার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক। পৃথক ভাবে খেলাধুলা পরিচালনা-সহ নানা পরিকল্পনা নিয়েছে প্রস্তাবিত ক্রীড়া পরিষদ। ক্লাবগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের ক্লাবগুলি বঞ্চিত হওয়ায় সোরগোল পড়ে গিয়েছে। নকশালবাড়ি ইউনাইটেড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ধর্মেন্দ্র পাঠক বলেন, “সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি এই ধরনের বঞ্চনা মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর দিনাজপুরেও হয়েছে। এখানেও কংগ্রেস বিধায়ক। সেই জন্যই কী বঞ্চিত করা হচ্ছে? সরকারের অবস্থান সুস্পষ্ট করা দরকার।” |