মার্কিন মুলুকে পড়তে যাওয়ার প্রস্তুতি
চ্চতর শিক্ষার জন্য বিদেশ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন অনেক ছাত্রছাত্রীর মধ্যেই আছে। গন্তব্য হিসেবে তাদের পছন্দ তালিকার ওপরের দিকেই থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১,৭০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে পছন্দের প্রতিষ্ঠানটি বেছে নেওয়া যথেষ্ট কঠিন। এর পর রয়েছে আবেদন পাঠানো থেকে স্টুডেন্ট ভিসা হাতে পাওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া। তবে আগেভাগেই পুরো বিষয়টি গুছিয়ে নিলে সমস্যা অনেক কমে যায়। দরকার সুষ্ঠু একটা পরিকল্পনা। কিছু দিন আগে ইউ এস আই ই এফ-এর একটি সেমিনারে এই বিষয় নিয়েই আলোচনা হল।
আবেদনের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হতে অন্তত বছরখানেক সময় লাগে। তাই পনেরো থেকে আঠেরো মাস আগেই খোঁজখবর শুরু করে দাও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দু’ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় আছে স্টেট বা পাবলিক ইউনিভার্সিটি এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের মধ্যে আছে ব্যাচেলর্স ডিগ্রি, এবং গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের মধ্যে আছে মাস্টার্স এবং ডক্টরাল ডিগ্রি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যাজুয়েট স্কুলগুলি কিন্তু ভর্তির জন্য তাদের দেশের চার বছরের ব্যাচেলর্স ডিগ্রির সমতুল শিক্ষাগত যোগ্যতা চায়। অর্থাৎ, ভারতে স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষ সম্পূর্ণ হলে তবেই এখানে আবেদন করা যাবে। ডক্টরাল ডিগ্রির জন্য অবশ্যই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকা আবশ্যক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ফল সেমেস্টার শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস থেকে। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য এই সেমেস্টারকেই বেছে নেয়। আর্থিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনাও এই সেমেস্টারেই বেশি থাকে। স্প্রিং সেমেস্টার শুরু হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে।
এ বার আসি আবেদনের প্রক্রিয়াটিতে। প্রথমেই পছন্দসই বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের মতোই গুরুত্বপূর্ণ তার বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে তথ্য। তোমার পছন্দ মতো বিভাগ এখানে আছে কিনা, স্পেশালাইজেশন সুযোগ কতটা, প্রোগ্রামের গুণগত মান কী রকম, আর্থিক সহায়তা পাওয়ার সুযোগ আছে কিনা, গবেষণাগার কেমন, ফ্যাকাল্টি হিসেবে কারা রয়েছেন, কোর্স-এর পাঠ্যসুচি কী রকম ইত্যাদি সম্পর্কে ওয়েবসাইট থেকে তথ্য জেনে নাও।


বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা পেতে হলে এই ওয়েবসাইটগুলি দেখতে পারো /, , .
এ বার পরীক্ষার জন্য তৈরি হওয়ার পালা। বিজ্ঞান এবং কলা শাখার বিভিন্ন বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় জি আর ই এবং টোয়েফল-এ প্রাপ্ত নম্বর চায়। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পর এই দেশে যেতে চাইলে দিতে হবে স্যাট পরীক্ষা। এম বি এ-এর ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন টোয়েফল এবং জি ম্যাট-এর নম্বর। ল স্কুল-এর জন্য এল স্যাট এবং মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আবেদনের জন্য বসতে হবে ইউ এস এম এল ই পরীক্ষায়। যে বিষয় নিয়ে পড়তে চাইছ, জি আর ই-তে তার সাবজেক্ট টেস্টের ব্যবস্থা থাকলে সেটাও দিয়ে রাখতে পারো। এতে স্কলারশিপের ক্ষেত্রে সুবিধে হয়। পরীক্ষার অন্তত এক মাস আগেই রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নাও। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নিখরচায় সংগ্রহ করে নিতে পারো ইউ এস আই ই এফ-এর ইনফরমেশন বুলেটিন। ভারতে পরীক্ষায় বসতে হলে পরীক্ষার্থীর পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক। মনে রেখো, অনেকেই প্রথম বার জি আর ই পরীক্ষায় ভাল নম্বর পায় না। সে ক্ষেত্রে আবেদন প্রক্রিয়ার মধ্যেই দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় বসা যায়।
সেই সঙ্গে চূড়ান্ত করতে হবে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমি আবেদন করতে চাও। এ ক্ষেত্রে সাধারণত ৮-১০টি বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেয় ছাত্রছাত্রীরা। আবেদনের জন্য লাগবে সমস্ত পরীক্ষার অ্যাটেস্ট করা মার্কশিট, স্টেটমেন্ট অব পারপাস, তিনটি সুপারিশ পত্র, জি আর ই বা জি ম্যাট এবং টোয়েফল-এ প্রাপ্ত নম্বর এবং অ্যাপ্লিকেশন ফি। সবচেয়ে ভাল হয়, যাঁরা তোমাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি পড়িয়েছেন, সেই শিক্ষকদের কাছ থেকে সুপারিশ পত্রগুলি এলে। বিষয়টির ওপর তোমার দখল কতটা, তোমার দুর্বলতা কোনখানে সুপারিশ পত্রে স্পষ্ট ভাবে বলা থাকলে সুবিধে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং আর্থিক সহায়তা দুইয়ের ক্ষেত্রেই ‘স্টেটমেন্ট অব পারপাস’ বা ‘পারসোনাল এসে’ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই বিশেষ কোর্সটি বেছে নেওয়ার কারণ, তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে এটি মানানসই কিনা, তোমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ইত্যাদি স্পষ্ট ভাবে যেন এতে লেখা থাকে। আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন থাকলে তার আবেদনও করতে হবে।
এমন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যারা তোমাকে আরও ভাল ভাবে জানতে ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করে। কলেজের কোনও প্রতিনিধি, শিক্ষক, প্রাক্তন ছাত্র ইন্টারভিউটি নিতে পারেন। তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে এই ধরনের ইন্টারভিউ তোমার পক্ষেও গুরুত্বপূর্ণ। আসলে বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্য দিয়ে তোমার দক্ষতা এবং আগ্রহ যাচাই করে নেওয়ার চেষ্টা করে।
তোমার অ্যাডমিশন অফারটি হতে পারে চার ধরনের পূর্ণ আর্থিক সহায়তা সহ অ্যাডমিশন, আংশিক সহায়তা সহ অ্যাডমিশন, আর্থিক সহায়তা ছাড়া অ্যাডমিশন এবং আসন খালি না থাকার ঘোষণা। আর্থিক সহায়তা পাওয়া গেলে ভিসার আবেদনের আগেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেন তোমার হাতে এসে পৌঁছয়।
শেষ ধাপটি হল ভিসা ইন্টারভিউ। এই ইন্টারভিউতে ভিসা অফিসার জানতে চাইবেন, তুমি ঠিক কেন পড়তে যেতে চাইছ ওঁদের দেশের ওই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে, জানতে চাইবেন তোমার যথেষ্ট আর্থিক সংস্থান আছে কিনা বা ইউনিভার্সিটি থেকে তুমি কোনও ধরনের আর্থিক সহায়তা পাচ্ছ কিনা।

• আবেদনের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হতে অন্তত বছরখানেক সময় লাগে।
তাই পনেরো থেকে আঠেরো মাস আগেই খোঁজখবর শুরু করা উচিত।
• বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ফল সেমেস্টার শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস থেকে।
আর্থিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনাও এই সেমেস্টারেই বেশি থাকে।
• বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং আর্থিক সহায়তা দুইয়ের ক্ষেত্রেই
‘স্টেটমেন্ট অব পারপাস’ বা ‘পারসোনাল এসে’ খুব গুরুত্বপূর্ণ।

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.