কামদাকিঙ্কর স্মৃতি গোল্ড কাপে চ্যাম্পিয়ন হল বেলডাঙা কোচিং অ্যাকাডেমি। রবিবার সুতির ছাবঘাটি মাঠে ২-০ গোলে বহরমপুর একাদশকে হারিয়ে জয়ী হয় তারা। দু’টি গোল বাঁচিয়ে এ দিন খেলার মোড় ঘুরিয়ে দিলেন বেলডাঙার গোলরক্ষক সৈফুদ্দিন শেখ। এ দিন তিনিই খেলার সেরা নির্বাচিত হয়েছেন।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০০৮ সালে তাঁর বাবা কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিতে এই গোল্ড কাপ ফুটবল শুরু হয়। এ দিন ফাইনালের শেষে প্রণববাবু বলেন, “এই ফুটবলকে ঘিরে একটা অ্যাকাডেমি গড়ার স্বপ্ন আমার বহু দিনের। জঙ্গিপুরে ইতিমধ্যেই তার কাজও শুরু হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি ওই অ্যাকাডেমির কাজ শেষ হয়ে যাবে।” এ দিন প্রণববাবু বহরমপুর থেকে সুতিতে আসার পথে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দু’টি জমিও ঘুরে দেখেন। ওই জমিতে একটি স্টেডিয়াম গড়তে চান কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। |
এ দিনের খেলার দ্বিতীয়ার্ধে ২৭ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলটি করেন নাজিমুল শেখ। তার ১৩ মিনিটের মধ্যে ফ্রি কিক-এ দ্বিতীয় গোলটি করেন ইকবাল হোসেন। এ দিনের ফাইনাল খেলায় প্রথম থেকেই ভাল খেলেছে বেলডাঙা। বহরমপুরের দু’টি গোল আটকান গোলরক্ষক সৈফুদ্দিন। খেলার দ্বিতীয়ার্ধে এক ও আট মিনিটের মাথায় দু’টি গোল আটকে বেলডাঙার গোলরক্ষক বাহবা পেয়েছেন মাঠে হাজির প্রখ্যাত খেলোয়াড় ও বিচারক মানস ভট্টাচার্য, মিহির বসু ও উলগানাথনদের। এ দিন খেলার সেরা হয়ে একটি মোটরবাইক উপহার পান তিনি।
উলগানাথনের মতে, “মাঠে আগাগোড়াই বেলডাঙার প্রাধান্য ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দু’টি নিশ্চিত গোলের সুযোগ হারায় বহরমপুর। সৈফুদ্দিন অসামান্য খেলেছেন। ওই গোল দুটি বহরমপুরের পক্ষে চলে গেলে এ দিনের খেলার ফলাফলই পাল্টে যেতে পারত।”
ব্লক ফাইনালে বহরমপুরকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বেলডাঙা। এ দিনের জয়ের পিছনে নিজের দলের সুসংগঠিত খেলাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বেলডাঙা কোচিং অ্যাকাডেমির অধিনায়ক তারিফ মোল্লা। তিনি খেলার শেষে বলেন, “ইকবাল, নাজিমুল-সহ চার ফরোয়ার্ডই গোলের সুযোগকে কাজে লাগাতে পেরেছেন। ওঁদের জন্যই জিততে পেরেছি আমরা। অনবদ্য ছিলেন সৈফুদ্দিনও।” তিনি আরও বলেন, “শুকনো খটখটে মাঠে সে ভাবে ঘাস নেই। বেলা সাড়ে ১২টায় প্রচন্ড রোদ। স্বভাবতই কোনও খেলোয়াড়ই সে ভাবে খেলতে পারেননি।”
অন্য দিকে, বহরমপুর একাদশের অধিনায়ক তারক রায় বলেন, “সামগ্রিক ভাবে আমরা খারাপ খেলিনি। ফরোয়ার্ডরা গোলের সুযোগ হারানোয় হারতে হয়েছে আমাদের।”
এ দিনের খেলা প্রসঙ্গে ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য বলেন, “মফসস্ল শহরে এত বড় ফুটবল টুর্নামেন্টের নজির আর নেই। দু’পক্ষই সাধ্য মতো চেষ্টা করেছে। তবে কোনও দলের খেলাই সে ভাবে নজর কাড়তে পারেনি। ইকবাল হোসেনের দ্বিতীয় গোলটি নজরকাড়া। বহরমপুরের রক্ষণ যথেষ্ট দুর্বল। বেলডাঙা যথেষ্ট চাপে রেখেছিল তাদের। খেলার সেরা নিঃসন্দেহে সৈফুদ্দিন।” উলগানাথন বলেন, “খেলায় অনেকেরই দক্ষতা রয়েছে। তবে গতি ও ক্ষিপ্রতার ঘাটতি রয়েছে। তবে যোগ্য দল হিসাবেই বেলডাঙা জিতেছে।” |