আসন্ন কলেজ নির্বাচনে কৃষ্ণনগরের দু’টি কলেজে প্রার্থীই দিতে পারল না এসএফআই। আগের বছর এই দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কৃষ্ণনগরের দ্বিজেন্দ্রলাল কলেজ ও বিপ্রদাস পালচৌধুরী ইন্সটিটিউশন অফ টেকনোলজিতে ক্ষমতায় ছিল এসএফআই-ই। শনিবার ছিল ওই দু’টি কলেজে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। কলেজ দু’টিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ছাড়া অন্য কোনও সংগঠনের তরফে মনোনয়ন জমা পড়েনি। প্রার্থী দিতে পারেনি ছাত্র পরিষদও।
আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি নদিয়ার ১৭টি কলেজে নির্বাচন। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই জেলার বিভিন্ন কলেজে পরিস্থিতি পাল্টেছে। অনেক কলেজেই গত বছর ক্ষমতায় থাকা এসএফআই বিধানসভা নির্বাচনের পরে ক্ষমতা হারায়। অনেক কলেজেরই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক-সহ ছাত্র প্রতিনিধিরা তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনে যোগ দেয়। অনেক কলেজে আবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে জোর করে ছাত্র সংসদ দখলের অভিযোগ তোলে এসএফআই। কলেজে কলেজে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটতে থাকে। এরই মধ্যে ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জোট না হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
কৃষ্ণনগরের যে দুটি কলেজে এ বার প্রার্থী দিতে পারেনি এসএফআই, গত বছর সেই কলেজগুলিতে একটিও আসন দখল করতে পারেনি ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। আগের বছর এসএফআই-এর বিরুদ্ধে কলেজে সন্ত্রাস করে নির্বাচন করার অভিযোগ ওঠে। এ বার পরিস্থিতি একেবারে উল্টো। ছাত্র পরিষদ ও এসএফআই-এর অভিযোগ, কলেজে সন্ত্রাস তৈরি করে নির্বাচনে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
এসএফআই-এর জেলা কমিটির সম্পাদক কৌশিক দত্ত বলেন, “এখনও বহু কলেজে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। পরিস্থিতি যা তাতে শুধু কৃষ্ণনগরের দু’টি কলেজেই নয়, অনেক কলেজেই আমরা প্রার্থী দিতে পারব না। বিধানসভা ভোটের পর থেকে ওরা জোর করে ছাত্র সংসদ দখল করছে। আমাদের সমর্থকদের আইডেন্টিটি কার্ড কেড়ে নিয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। ফলে ছাত্র ছাত্রীরা নির্বাচনে যোগ দিতে সাহস পাচ্ছে না।”
বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছাত্র পরিষদের নিত্যগোপাল মণ্ডল বলেন, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কলেজে কলেজে সন্ত্রাস শুরু করেছে। ওদের সমর্থন না করলে ছাত্রদের কলেজে ঢুকতে দেওয়া দেওয়া হচ্ছে না। অনেকে পরীক্ষাও দিতে পারেনি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা ভোটে প্রার্থী দিতে পারছি না।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি জয়ন্ত পাল বলেন, “অভিযোগ একেবারে মিথ্যে। এত দিন ওরাই সন্ত্রাস করে ভোটে জিতেছে। প্রার্থী দিতে দেয়নি। এ বার ভাল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কেউ আর ওদের হয়ে ভোটে দাঁড়াতে রাজি হচ্ছে না।” তিনি বলেন, “প্রার্থী দেওয়া নিয়ে যদি ওদের কোথাও কোনও সমস্যা হয়, আমরা দাঁড়িয়ে থেকে ওদের মনোনয়ন জমা দিয়ে দেব।” |