মাদকবিরোধী অভিযানে বড়সর সাফল্য পেল লালগোলা থানার পুলিশ। তারপরে সীমান্তবর্তী এই জেলায় চোরাপাচার বন্ধেও উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “লালগোলা থেকে হেরোইন ব্যবসা গুটিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য তথ্য সংগ্রহ চলছে। হেরোইন তৈরির কাঁচা মাল হিসেবে উত্তরপ্রদেশ থেকে মরফিন নিয়ে আসা হয়। জেলায় যে পথ দিয়ে ওই কাঁচা মাল ঢুকছে, তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ফেনসিডিল ও গবাদি পশু চোরাচালান রুখতেও বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।” গত তিন দিনে যেমন রানিনগর থানা এলাকা থেকে ৫০টি ও ইসলামপুর থানা এলাকা থেকে ৪টি গবাদি পশু আটক করেছে পুলিশ। |
গত ১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সুপার জেলার সমস্ত পুলিশ অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ‘অগ্রাধিকারের’ ভিত্তিতে অবিলম্বে কার্যকরী করার জন্য ১৮ দফা নির্দেশিকা জারি করেছিলেন তিনি। ওই তালিকার শুরুতেই রয়েছে গবাদি পশু থেকে বিভিন্ন সামগ্রী-সহ মাদক দ্রব্য সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ও পাচার বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। এর পরেই লালগোলা থানার পুলিশ শনিবার যে পরিমাণ হেরোইন ও হেরোইন তৈরির সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছে, যা এর আগে জেলায় কোনও দিন ঘটেনি বলে জেলা পুলিশের দাবি। ওই দিন রাতে বিলবোরাকোপরা পঞ্চায়েতের রামনগর-জোতখামার এলাকার একটি হেরোইন তৈরির কারখানায় হানা দিয়ে ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার হেরোইন, ১৯ কিলো মরফিন, ২৫ কেজি সোডিয়াম কার্বোনেট, ২৫ লিটার অ্যাসিড পুলিশ বাজেয়াপ্ত করে। দুজন যুবককে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার লালগোলা যান। পদ্মার পাড় বরাবর বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া লালগোলা থানার যে সমস্ত এলাকা দিয়ে চোলাচালান হয়ে থাকে, সেই সব এলাকা তিনি পরিদর্শন করেন। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গী ছিলেন ১০৫ নম্বর বিএসএফ ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার-সহ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্তা। পুলিশ সুপার বলেন, “গবাদি পশু-সহ বিভিন্ন চোরাচালান রুখতে সীমান্ত এলাকায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে বিএসএফের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।” এর পরে তিনি লালবাগ মহকুমা পুলিশ অফিসার, লালগোলা থানার ওসি-সহ বিভিন্ন পুলিশ অফিসারদের সঙ্গেও আলোচনায় বসেন।
পুলিশ সুপার বলেন, “হজ করতে যাওয়ার নামে একশ্রেণির হজযাত্রীদের আরবে ভিক্ষাবৃত্তির কাজে ব্যবহার করা হয়। ওই বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সেই সঙ্গে নারী পাচার রুখতেও বিশেষ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।” |