নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
লিয়েন্ডার পেজের ৩৮ পেরিয়েও ডাবলসে গ্র্যান্ড স্লাম জেতার রহস্য নিয়ে যখন টেনিসমহলে তোলপাড়, তখন স্বয়ং অস্ট্রেলীয় ওপেন চ্যাম্পিয়ন ফাঁস করে দিলেন, নিজের ১৯ বছর বয়স থেকে তিনি তিন-তিন বার অবসর নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। প্রথম বার, সদ্য জুনিয়র লেভেল পেরিয়ে যখন ইউরোপের হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় পেশাদার টেনিস সার্কিটে সপ্তাহের পর সপ্তাহ এক-একটা দেশ, এক-একটা শহর ঘুরে-ঘুরে খেলতে হচ্ছিল তাঁকে। “অত ঠান্ডায় কী করে বাঁচব ভেবে ভয়েই উনিশ বছরেই টেনিস ছেড়ে দেব এক বার ঠিক করেছিলাম।” দ্বিতীয় বার, ২০০৩-এ। যখন ব্রেন টিউমারে তিনি আক্রাম্ত হয়ে প্রায় জীবন সংশয়ের পর্যায় চলে গিয়েছিলেন। “আমার অলিম্পিয়ান বাবা আর মার্টিনার (নাভ্রাতিলোভা) মতো কিংবদন্তি টেনিস ব্যক্তিত্বের প্রবল সাহাযার্থে সেখান থেকে আবার কোর্টে ফিরতে পেরেছিলাম। ঈশ্বরের অসীম করুণা।” তৃতীয় বার, বছর তিনেক আগে। যখন তাঁর একমাত্র মেয়ে আইয়ানা জন্মায়। “আমার জীবনে ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার পাওয়ার পর ভেবেছিলাম আর কী জীবনে পাওয়ার থাকতে পারে।” নিজের তিন বার অবসর নেওয়ার ইচ্ছে প্রসঙ্গে আজ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন লিয়েন্ডার।
সঙ্গে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন লিয়েন্ডার। জানিয়ে দিয়েছেন, এ বছর অগস্টে লন্ডন অলিম্পিক-ই তাঁর শেষ অলিম্পিক না-ও হতে পারে। টানা ষষ্ঠ অলিম্পিক খেলতে চলা লিয়েন্ডার বলছেন, “লন্ডনেই আমার জীবনের দ্বিতীয় অলিম্পিক পদক জেতার সবচেয়ে ভাল সুযোগ আছে আমি ভালই জানি। কিন্তু চার বছর পর দু’হাজার ষোলো অলিম্পিকও আমি খেলে দেব না যে কে বলতে পারে?” এবং সেই সময় লিয়েন্ডারের বয়স হবে ৪৩ ছুঁইছুঁই।
অবিশ্বাস্য ফিটনেস। দু’দশকেরও বেশি দীর্ঘ টেনিসজীবনে চোটআঘাত থেকে মুক্ত থাকার রহস্য, এ সব নিয়ে লিয়েন্ডারের মন্তব্য, “আমার একটা ঈশ্বরপ্রদত্ত শরীর, রিফ্লেক্স আর খেলার সময় হাত-চোখের বোঝাপড়া আছে। তার সঙ্গে সঙ্গে আমি গত পঁচিশ বছর ধরে প্রচন্ড নিয়মনিষ্ট জীবনযাপন করি। তা ছাড়া সেই বারো বছর বয়সে ‘আর্ট অব লিভিং’ বই থেকে শেখা নিঃশ্বাসের একটা বিশেষ এক্সারসাইজ করে আসছি নিয়মিত।” মজা করে বলেছেন, “মেয়েদের টেনিসে বিশ্বের দু’নম্বর কিভিতোভার ট্রেনার আমার সঙ্গে এখন পেশাদার ট্যুরে ঘোরে। ও আমাকে ‘পাপা’ বলে ডাকে। আমি ওকে বলি ‘গ্র্যান্ড-পা’। দু’জনের বুড়ো হাড়ে ভেল্কিতেই বছরে প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম নিয়ে আসতে পেরেছি ভারতে।” |