এক কামরার ট্রাম, মনো-ট্রাম প্রভৃতি চালিয়ে সংস্থাকে বাঁচাতে চান সিটিসি কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে সংস্থার পরিচালনমণ্ডলীর আগামী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর পাশাপাশি, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা দু’টি রুটও শীঘ্র চালু করতে চান তাঁরা। এ ব্যাপারে সংস্থার তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি) এবং কলকাতা পুরসভাকে।
সিটিসি-র ১১টি ডিপোয় মোট ট্রামের সংখ্যা এখন প্রায় ৩০০। এর মধ্যে রাস্তায় চলে গড়ে ১২৫টি। মূলত ধীর গতির জন্য আগের তুলনায় ট্রামের আকর্ষণ কমেছে। কর্তৃপক্ষ মনে করেন, এক কামরার ট্রাম চালু করলে গাড়ির ভিড় কাটিয়ে সেটি আরও দ্রুত যাতায়াত করতে পারবে। সিটিসি-র চেয়ারম্যান শান্তিলাল জৈন এ কথা জানিয়ে বলেন, “এখনকার ট্রামকে আরও আধুনিক আদল দিয়ে একই রুটে মনো-ট্রাম হিসেবে চালানো সম্ভব। এর জন্য যে যান্ত্রিক পরিকাঠামো দরকার, তা নোনাপুকুর ওয়ার্কশপে করা যাবে।” তিনি জানান, পরিচালনমণ্ডলীতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাড়পত্রের জন্য প্রস্তাব যাবে মহাকরণে। সরকারি অনুমতি পেলে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় দু’-একটি শহরের হাল্কা মনোরেল দেখে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ঠিক করা হবে।
কর্তৃপক্ষের মতে, এক দশকে শহরের বেশ কিছু ট্রাম-রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। জোকা থেকে বিবাদী বাগ, এই ১৬.৭২ কিলোমিটার পথে মেট্রো রেল চালানোর সিদ্ধান্তের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে জোকা থেকে এসপ্লানেড রুট। তারাতলা ব্রিজ এবং গড়িয়াহাট ব্রিজ তৈরির সময়ে আগেই বন্ধ হয়েছিল ডায়মন্ড হারবার রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ প্রভৃতি কিছু রুটও। শান্তিলালবাবু বলেন, “ভূগর্ভে নিকাশির কাজের জন্য মোমিনপুর-টালিগঞ্জ এবং বালিগঞ্জ-টালিগঞ্জ রুট বন্ধ আছে। ওই কাজ দ্রুত শেষ করতে যথাক্রমে এইচআরবিসি এবং কলকাতা পুরসভাকে লেখা হয়েছে।” ওই দু’টি রুট ফের চালু হলে গড়ে ৩৫টি ট্রাম চালানো যাবে।
সংস্থা সূত্রে খবর, বেতন বাবদ প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। সেখানে ট্রাম এবং সিটিসি-র বাসে টিকিট বিক্রি করে মাসে মিলছে যথাক্রমে ৪ কোটি টাকারও কম। এ কথা জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, “আয় বাড়াতে টিকিটের পিছনে বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঠিক হয়েছে, আয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন গুমটিতে বহু বছর ধরে জমে থাকা যন্ত্রাংশ বিক্রি করবেন কর্তৃপক্ষ। কোন কোন জিনিস, কী ভাবে বিক্রি হবে, তা খতিয়ে দেখতে তৈরি হয়েছে কমিটি।” আকর্ষণ বাড়িয়ে যাত্রী টানতে অব্যবহৃত ট্রামের কামরা পরিমার্জন করে ময়দান-সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় ‘হেরিটেজ ট্রাম’ এবং রিমোট-কন্ট্রোল ট্রাম চালাতে চান কর্তৃপক্ষ। আগামী গ্রীষ্ম থেকে চালু হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাম। সিদ্ধান্ত মতো ট্রামের দ্বিতীয় শ্রেণির কামরাও আগামী গ্রীষ্ম থেকে পর্যায়ক্রমে উঠিয়ে দেওয়া হবে। |