এক কিশোর রেস্তোরাঁকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। রবিবার সকালে বড়বাজার থানার কাছে মহাত্মা গাঁধী রোডের উপরে একটি রেস্তোরাঁ থেকে রামকরণ কামোদ নামে ওই কিশোরের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিহারের মধুবনীর বাসিন্দা রামকরণ ওই রেস্তোরাঁতেই কাজ করত।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরের। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত করতে রেস্তোরাঁর অন্য কর্মীদেরও জেরা করছে পুলিশ। খোঁজ চলছে রেস্তোরাঁর মালিকের। পুলিশ জানিয়েছে, রেস্তোরাঁর অন্যান্য কর্মীদের দাবি, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির ফলেই ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অন্যান্য কর্মীরা জেরায় পুলিশকে জানিয়েছেন, শনিবার রাতে ওই কিশোর রান্নাঘরে কাজ করার সময়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে। তাঁরা আরও জানান, ওই কিশোরের বয়স ১৮ বছরের কম। |
রামকরণের মামা দুনিলাল কামোদের অভিযোগ, “সকালে রামকরণের সহকর্মীরা আমাকে জানান, রাতে আমার ভাগ্নে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পরে তার চিকিৎসার জন্য তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই ভাবে আমার ভাগ্নেকে ফেলে রাখতে বলেন। পরে রামকরণের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় রেস্তোরাঁর কর্মীরাই তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু শুনলাম, তার আগেই আমার ভাগ্নে মারা যায়।” পুলিশ জেনেছে, এর পরে কর্মীরা ওই কিশোরের দেহ রেস্তোরাঁয় ফিরিয়ে আনেন। সকালে তাঁরাই পুলিশকে খবর দেন। তবে পুলিশের দাবি, মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। আজ, সোমবার রামকরণের পরিবারের অন্য লোকেদের বিহার থেকে কলকাতায় আসার কথা। এ দিকে, রবিবার সকালে ওই ঘটনার পরে এলাকাবাসীরা ওই রেস্তোরাঁর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁদের অভিযোগ, ওই এলাকায় অসংখ্য রেস্তোরাঁয় ভিন্ রাজ্য থেকে নাবালক ছেলেদের এনে কম বেতনে খাটানো হয়। ঘটনার পরে কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও রেস্তোরাঁর সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। রেস্তোরাঁর বন্ধ গেটের উপরে দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা মহেশ শর্মার অভিযোগ, “রেস্তোরাঁ-কর্তৃপক্ষের অমানবিক ব্যবহারের জেরেই ওই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সকালে পুলিশ আসার আগে ওই রেস্তোরাঁর কর্মীরা লিখিত ভাবে আমাদের গোটা ঘটনা জানিয়েছে। আমরা সেটি পুলিশের কাছেও দিয়েছি।” |