একশো দিনের কাজ নিয়ে বচসার জেরে তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। কাঁকসা থানার দোমড়া গ্রামের এই ঘটনায় জনা পাঁচেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক জখম হন। দু’জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের পাল্টা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই এমন ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দোমড়া গ্রামের বীণা রুইদাস একশো দিনের কাজে যোগ দিতে গেলে স্থানীয় সিপিএম কর্মী তাপস দাস বীণাদেবীর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে রবিবার গ্রামের তৃণমূল সমর্থক উত্তম রুইদাস, সুকুমার বাসুরি, সুনীল বাসুরি ও দশরথ মুর্মু বিষয়টি নিয়ে তাপসবাবুদের সঙ্গে কথা বলতে যান। দশরথবাবু অভিযোগ করেন, সেই সময়ে তাপসবাবু ও তাঁর সঙ্গীরা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বীণাদেবীকে একশো দিনের কাজে যোগ দিতে দেওয়া হবে না বলে হুমকিও দেন।
দশরথবাবুর আরও অভিযোগ, “কাঁকসা থানায় পুরো বিষয়টি জানিয়ে গ্রামে ফেরার পরেই তাপসবাবুর নেতৃত্বে সিপিএম সমর্থকেরা আমার বাড়িতে চড়াও হয়। আশপাশের বাসিন্দারা বাধা দিলে তারা পালিয়ে যায়।”
বিকেলে তৃণমূলের প্রাক্তন কাঁকসা ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সীর নেতৃত্বে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা দোমড়া গ্রামে যান। দেবদাসবাবুর অভিযোগ, “হঠাৎ তাপস দাসের নেতৃত্বে এক দল দুষ্কৃতী আমাদের উপরে চড়াও হয়। বাঁশ, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে। আমাদের পাঁচ জন জখম হন।” জখমদের পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকিদের চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও সন্ধ্যায় দেবদাসবাবু ও তৃণমূল কর্মী নবকুমার সামন্তকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দেবদাসবাবু বলেন, “মাথায় চোট পেয়েছি। মোট ১৭টি সেলাই দিতে হয়েছে।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি (শিল্পাঞ্চল) অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে একশো দিনের প্রকল্পে বরাবর বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে আসছে সিপিএম। প্রতিবাদ করলেই মারধর করা হয়। দোমড়াতেও সেই একই ঘটনা ঘটেছে।” বিষয়টি তিনি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন বলে জানান অপূর্ববাবু।
সিপিএম অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের কাঁকসা জোনাল সম্পাদক অলোক ভট্টাচার্য পাল্টা বলেন, “কাঁকসায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। দিন কয়েক আগেই তৃণমূলের একটি মিছিলে হামলা চালিয়েছিল ওদের দলেরই কিছু কর্মী-সমর্থক। দোমড়াতেও তেমনই ঘটেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়।” তাপসবাবুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে দাবি অলোকবাবুর। এ দিন সকাল থেকেই দোমড়ায় কয়েক জন পুলিশ কর্মী মোতায়েন ছিলেন। কিন্তু বিকেলে অশান্তির পরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কাঁকসা থানা থেকে পুলিশ গ্রামে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। ফের যাতে কোনও অশান্তি না হয় সে জন্য টহল চলছে। |