সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনে রাজ্যে অন্যান্য জেলাকে অনেকটা পেছনে ফেলে দিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে একাধিক শিবির করে বিভিন্ন চালকলের মাধ্যমে ধান কেনার পাশাপাশি লেভি সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের। নগদের বদলে চেকে ধান কেনা নিয়ে শুরুতে ক্ষোভ দেখা দিলেও তা সামলে বিভিন্ন এলাকায় রাতভর শিবির করে ধান কেনা হয়েছে। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসকের সঙ্গে ভিডিও কন্ফারেন্সে ধান কেনার ওই সাফল্যে উৎসাহিত রাজ্যের মুখ্য সচিব সমর ঘোষ লক্ষ্যমাত্রার বেশি ধান কেনা নির্দেশ দেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “চালকল মালিকদের সহযোগিতার পাশাপাশি নানা সমবায় সংস্থা ও এফসিআইকে ধান কেনার কাজে নামানো হয়েছে। ২০ হাজার টন লেভি চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। চালকলগুলির মাধ্যমে ধান কেনা হয়েছে ২৭ হাজার টন।” জেলা খাদ্য নিয়ামক ভাস্কর হালদার বলেন, “তপনের একটি মিনি চালকলের চেক বাউন্সের ঘটনা ছাড়া ধান কেনা নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। ওই মিনি চালকলের তরফে ব্যাঙ্কে টাকা জমা পড়েছে।” প্রতি অঞ্চলে ২০ থেকে ২২টি সরকারি শিবিরে পুলিশের উপস্থিতিতে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে বলে খাদ্য নিয়ামক দাবি করেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “শুরুতে পরিস্থিতি ভাল ছিল না। জেলার ১০০ শতাংশ চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার দাবিতে অবরোধ, বিক্ষোভ এবং জেলাশাসক অফিস ঘেরাও আন্দোলনের পরে প্রশাসনের টনক নড়েছে।” সরাসরি চাষিদের থেকে ধান কেনা নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের সাফল্যের দাবিকে মেনে নেননি সিপিএমের সারা ভারত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক রঘুনাথ রায়। তিনি বলেন, “যাদের ধান কেনা হচ্ছে তাঁরা সম্পন্ন চাষি ও ফড়ে।” প্রশাসনের কর্তারা ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা জানান, কুইন্টাল প্রতি ১০৮০ টাকা সহায়ক দামে চাষির কাছ থেকে ৩ কুইন্টাল ধান কেনার প্রক্রিয়া গত নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এখনও চলছে। গত সপ্তাহে বালুরঘাটের চিঙ্গিশপুর অঞ্চলে একটি চালকলে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া ছিল ২০০০ কুইন্টাল। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের পাশাপাশি সদস্যরাও চাষিদের কাছে ধান বিক্রির স্লিপ বিলি করেন। সব ধান কিনতে হবে বলে বিক্ষোভ শুরু হয়। খবর পেয়ে যান জেলাশাসক। পরিস্থতি সামলে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু করতে বিকেল গড়িয়ে যায়। পর দিন সকাল ৮টা পর্যন্ত সবার থেকে তিন হাজার কুইন্টাল ধান কেনা হয়। |