একটি গরু এবং ১৪ হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের পুত্রসন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠল। যিনি বিক্রি করেছেন তিনি দিনমজুর। তাঁর ৯ সন্তান। শেষের দু’জন যমজ। এই যমজ সন্তানের মধ্যে এক পুত্রসন্তানকে তিনি বিক্রি করেছেন এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকের আলতাপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর বটতলা এলাকায়। মাস খানেক আগে বিক্রি হলেও শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দারা পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
শিশুটির বাবা মহম্মদ সইফুদ্দিনের বক্তব্য, “অভাবের সংসার চালাতে না-পেরে শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছি।” শিশুটিকে কিনেছেন আনারুল হক ও ইযাতুন বিবি। আনারুল ভিনরাজ্যে দিনমজুরি করেন। ইযাতুন বিবি বলেন, “পনেরো বছরেও আমাদের কোনও ছেলেমেয়ে হয়নি। ১৪ হাজার টাকা ও একটি গরু দিয়ে সইফুদ্দিনের কাছ থেকে একটি ছেলেকে কিনে নিয়েছি। ওকে আমি বড় করতে চাই।”
করণদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শঙ্কর হেমব্রম বলেন, “অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। শিশু বিক্রি করা বেআইনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে খুব শীঘ্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘটনার খোঁজখবর নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইসলামপুরের মহকুমাশাসক পার্থ ঘোষ। তিনি বলেন, “খুবই গুরুতর বিষয়টি। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সইফুদ্দিনের ২ থেকে ১৩ বছর বয়সী ৭ জন ছেলেমেয়ে ছিল। মাস চারেক আগে তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বিবি যমজ পুত্র ও কন্যা সন্তান প্রসব করেন। মাস খানেক আগে তিন মাস বয়সী ওই পুত্রসন্তানকে তিনি বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ।
সইফুদ্দিনের দাবি, “দিনমজুরের কাজ করে ৯ ছেলেমেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। বহু বার প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েও কোনও সরকারি সুবিধা পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে একটি ছেলেকে আনারুলের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।”
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বক্তব্য, “কেন ওই ব্যক্তিকে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়া গেল না, কেন উনি পঞ্চায়েত স্তর থেকে সরকারি সাহায্য পাননি খতিয়ে দেখা হবে। সইফুদ্দিনের অভাব থাকলে তাঁকে সরকারি জমির পাট্টা দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ারও চেষ্টা করা হবে।” |