পেডিকিয়োর পাঁচালি

ক্লোজ শট ১ নূপুর পরা দু’টি নগ্ন পা ঋষিবরের ধ্যান ভগ্ন করছে।
শট ২ আলতা পরা দু’টি পায়ের দুধে আলতায় পা দিয়ে নববধূর গৃহপ্রবেশ।
শট ৩ পাঁচ ইঞ্চি হিল জুতো পরিহিত দু’টি পাদুকা নরম ঘাসের ওপর স্বামীর সঙ্গে খুনসুটিতে ব্যস্ত।
শট ৪ খড়ম পরে ছবি বিশ্বাস সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসছেন। আমরা পর্দা জুড়ে শুধু খড়মসমেত দু’টি পায়ের পাতা দেখতে পাচ্ছি।
কৈশোর থেকেই এই ধরনের বিভিন্ন ধরনের ছবির ছাপ আমাদের মনের মধ্যে থেকে যায়। বাস্তবে বিয়ের আগে ছেলেরা যে কত বার মেয়েদের পায়ে পড়ে, তার গুনতি হয় না। সুতরাং, ‘তোমার স্থান পায়ে’ এই ধরনের বাক্য আজকাল অচল। এখন মেয়েরা প্রতি মাসে পায়ের যত্নে মোটা অঙ্কের একটা টাকা খরচ করতে একটুও কিপটেমি করে না।
এখনকার চলতি ফ্যাশন হল দু’টি স্ট্র্যাপ সমেত একদম ফ্ল্যাট চটি। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে আপনার পা দু’টিকে সব সময় একেবারে ফিটফাট রাখতেই হবে।
পেডিকিয়োর শব্দটি ল্যাটিন ভাষা থেকে এসেছে। মূল শব্দগুলি হল পেডিস (pedis), যার অর্থ পায়ের, কিউরা (cura)-র অর্থ কেয়ার বা যত্ন। প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকে, মিশর এবং চিন, দু’টি দেশেই এর প্রচলন ছিল। মিশরে পেডিকিয়োরের জন্য সোনার সরঞ্জাম ব্যবহৃত হত। এখন যেমন পেডিকিয়োর মানে মেয়েদের একচেটিয়া রাজত্ব, ছেলেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কাছেই ঘেঁষে না, তখন এ রকমটি ছিল না। রাজারাজড়াদের পায়ের যত্ন ছিল ‘স্টেটাস সিম্বল’।
আমাদের শরীরের ওজনটি নেয় হালকা দু’টি পায়ের পাতা। সুতরাং পায়ের পাতা দু’টির ওপর কিছু অত্যাচারও হয়। সুতরাং অল্পবিস্তর যত্ন নেওয়া যেতেই পারে। আমাদের পায়ের পাতায় বেশ কিছু নার্ভ জমা থাকে। মাসাজের মাধ্যমে সেগুলিতে যথাযথ চাপ পড়ে এবং সমস্ত শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। সৌন্দর্য বাদ দিলে, শুধু শরীরের প্রয়োজনেই মাসে একটি পেডিকিয়োর সম্ভব হলে ভাল হয়।
সাজ-সরঞ্জাম
অ্যাসিটোন, কটন বলস, কিউটিকল ক্রিম, কিউটিকল পুশার, ফুট বাথ লোশন, নেলফাইলার, নেলপলিশ, অরেঞ্জ ব্রড স্টিকস। টো নেল ক্লিপারস। তোয়ালে, পেডিকিয়োর স্পা, পিউমিস স্টোন, পেপার টাওয়েল।

নেল কসমেটিকস
বেসকোট, কিউটিকল ক্রিম, কিউটিকল অয়েল, কিউটিকল রিমুভার, নেলব্লিচ, ড্রাই নেলপলিশ, নেলপাম টোনার।

সরঞ্জাম
নেলক্লিপারস, কটন বলস, নেলপলিশ রিমুভার, কিউটিকল ক্রিম, নেলফাইলার, ফুট স্ক্রাব, ময়েশ্চারাইজার।

প্রথম ধাপ দ্বিতীয় ধাপ তৃতীয় ধাপ
প্রথমে নখকে ট্রিম করিয়ে নিতে হবে, অর্থাৎ নখটিকে ঠিকঠাক শেপে আনতে হবে। পুরনো নেলপলিশ তুলে ফেলতে হবে। নখ কাটার সময় সম্পূর্ণ সোজা করে কাটতে হবে। কিন্তু বেশি কাটা হয়ে গেলে আঙুলের চার পাশে অত্যন্ত ব্যথা হতে পারে। গরম জলে বাথসল্ট এবং লিকুইড সোপ দিয়ে পাতা দু’টিকে দশ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। পা জল থেকে তুলে, মুছে কিউটিকল ক্রিম লাগিয়ে কিছু ক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। এই ক্রিমের জন্যই নখের চার পাশের ময়লা নেল ক্লিপারের মাধ্যমে উঠে আসবে। নখের পাশে যে জমে থাকা কালো দাগ আর থাকবে না। পুনরায় পা’টি মুছে নেবেন।
চতুর্থ ধাপ পঞ্চম ধাপ
ভাল স্ক্রাবার-এর সাহায্যে পায়ের মৃত কোষ তুলে ফেলুন। গোড়ালি বা যে জায়গার ত্বক শক্ত হয়ে গিয়েছে, সেখানে পিউমিস স্টোন ব্যবহার করুন। পা ভাল করে মুছে, দক্ষতার সঙ্গে ভাল ময়েশ্চারাইজার দিয়ে মাসাজ করতে হবে কমপক্ষে পাঁচ থেকে দশ মিনিট। এতে আরাম অনুভব করবেন। শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর হবে। পায়ের সৌন্দর্য নিয়েও আর চিন্তা করতে হবে না। সব শেষে পছন্দের রঙের নেলপলিশ লাগিয়ে নিন।
রকমারি পেডিকিয়োর
ফিশ পেডিকিয়োর অ্যারোমা পেডিকিয়োর
প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, পেডিকিয়োর করানো হয় শুধু মাত্র নখের ময়লা, মৃত কোষ, কিউটিকল এই সব পরিষ্কারের জন্য। জলের মধ্যে তিন ইঞ্চি মাপের ছোট ছোট মাছ ছেড়ে দেওয়া হয়। এই মাছগুলি সমস্ত ময়লা খেয়ে নেয়, পা’টি পরিষ্কার করে দেয়। আপনার আকুপাংচার-এর মতো একটি অনুভূতি হবে। যে জলে পা ডুবিয়ে রাখবেন, সেই জলটিতে অ্যারোমা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে দিলে ঔজ্জ্বল্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায় এবং পা বেশি নরম হয়ে যায়।
থাই পেডিকিয়োর
এটি পৃথিবীবিখ্যাত। বেশির ভাগ মানুষ এর লোভেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেড়াতে যান। আপনি এখন কলকাতায় বসেই এর আরাম অনুভব করতে পারেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার লোকেরা মনে করেন আমাদের পায়ের পাতায় বিশেষ বিশেষ এনার্জি লাইন গেছে (প্রেশার পয়েন্ট ছাড়া)। সুতরাং কোনও দক্ষ ব্যক্তি যদি সুনিপুণ কৌশল প্রয়োগ করে এবং এই পদ্ধতিগুলি মেনে থাই পেডিকিয়োর করায়, আপনার শরীর ও মনের ক্লান্তি দূর হবেই। এ ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ধরনের স্টিক (বেলুনের মতো দেখতে) ব্যবহার করা হয়।
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.