নার্সিংহোমগুলির পরিকাঠামো দেখে সন্তুষ্ট নয় প্রতিনিধি দল
গ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা কেমন? দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত শংসাপত্র আছে কি না? পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বা নিয়মানুযায়ী শয্যাসংখ্যা আছে কি না ইত্যাদি ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে এসে অসন্তুষ্ট হয়েই ফিরে গেলেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি দল। শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় বিভিন্ন নার্সিংহোমে আভিযান চালান রাজ্য সরকারের এক প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন বনগাঁ মহকুমার স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার মণ্ডল, দলকল বাহিনীর ওসি দীপককুমার চট্টোপাধ্যায়, বনগাঁ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণা রায়, কাউন্সিলার হিমাদ্রি মণ্ডল, তাপস মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। ছিল বনগাঁ থানার পুলিশও।
এ দিন সকাল ১১টা থেকে অভিযান শুরু হয়। বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আঢ্য বলেন, “মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার্স দফতরের জয়েন্ট সেক্রেটারি সম্প্রতি পুরসভাকে চিঠি দিয়ে ওই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। এর পরেই মহকুমাশাসক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের দফতরে সংশ্লিষ্ট সব দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকের পরে এদিন এই অভিযান শুরু করা হয়।” অভিযানের সময় নার্সিংহোমগুলির অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ওই প্রতিনিধিরা। সুকুমারবাবু বলেন, “আমরি কান্ডের পর নার্সিংহোমগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখতে এবং সমস্ত নথিপত্র সঠিক আছে কি না তা জানতেই আমরা এসেছি। ভবিষ্যতে আমরির মতো ঘটনা যাতে না ঘটে এবং রোগীরা যাতে ভালভাবে চিকিৎসা করিয়ে ঘরে ফিরতে পারেন সেই ব্যবস্থা উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য। তবে বেশ কিছু নার্সিংহোমে দেখা গিয়েছে নির্দিষ্ট শয্যাসংখ্যার চেয়ে বেশি শয্যা রয়েছে। সেগুলি ঠিক করতে বলা হয়েছে।”
একটি নার্সিংহোমে অগ্নিনিবার্পণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছে প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র
পুরসভা সূত্রের দাবি, অভিযান চালাতে গিয়ে দেখা গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেওয়া অনুমতি সংক্রান্ত কোনও নথিপত্র দেখাতে পারেনি একটি নার্সিংহোম। আর একটি নার্সিংহোমের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সেটি বাড়ি হিসাবে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সেটি বেআইনিভাবে নার্সিংহোম করা হয়েছে। একটি নার্সিংহোমের তো প্যাথলজি বিভাগের অনুমতি সংক্রান্ত কাগজপত্রই নেই।
অভিযানের পরে প্রতিনিধিরা জানান, অগ্নিনির্বাপক শংসাপত্র কোনও নার্সিংহোমেরই ঠিকমতো নেই। নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। কয়েকটি নার্সিংহোমে যাতায়াতের রাস্তা এতটাই সংকীর্ণ যে আগুন লাগলে দ্রুত রোগীদের বের করে আনা সম্ভব নয়। একটি নার্সিংহোমে গিয়ে দেখা গেল, সিটি স্ক্যান এবং এক্স-রে মেশিন রয়েছে। কিন্তু শংসাপত্র নেই। কৃষ্ণা দেবী বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে যাবতীয় তদন্ত করা হয়েছে। তবে নার্সিংহোমগুলির কাজে আমরা সন্তুষ্ট নই।’’ হিমাদ্রিবাবুর কথায়, “ভবনের লাইসেন্স, শয্যার লাইসেন্স-সহ বিভিন্ন কাজে নার্সিংহোমগুলির কমবেশি ত্রুটি রয়েছে। শীঘ্রই ওই সব নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ডেকে তাঁদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নথিপত্র ঠিক করার জন্য বলা হবে।”
একটি নাসির্ংহোমের মালিক জানান, গত ৯ মাসে পুরসভাকে তাঁরা কর বাবদ ৭৭ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু পুর পরিষেবাই ঠিকমতো মেলে না। ময়লা পরিষ্কারের জন্য কর দেওয়া হলেও তা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। কয়েকটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের নার্সিংহোমে কম খরচে সিজার, গল ব্লাডার স্টোন, অ্যাপেন্ডিক্স প্রভৃতি অস্ত্রোপচার করা হয়। রোগীদের কাছে যে টাকা নেওয়া হয় তার মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, শয্যাভাড়া, ওষুধপত্র সব ধরা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে রোগী সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে বাড়ি যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট টাকার চেয়ে অনেক কম টাকা দেন। এই অবস্থার মধ্যে দিনে ১০-১২ ঘণ্টা করে লোডশেডিং রয়েছে। সেই বাবদ জেনারেটরের খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে লাভ বলতে প্রায় কিছুই থাকে না। বনগাঁ নার্সিংহোম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মলয় সাহা বলেন, “অগ্নিনির্বাপক শংসাপত্র নেই এটা ঠিক। তবে ওই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছি। তবে সরকার বেশি চাপ দিলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.